Ridge Bangla

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরও ব্লাড সুগার বাড়ার কারণ

অনেকেই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরও রক্তে শর্করা বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত হন। এর পেছনে নানা শারীরিক ও জীবনযাপনগত কারণ থাকতে পারে।

প্রধান কারণসমূহ

১) খাবারে লুকানো কার্বোহাইড্রেট: অনেক ‘স্বাস্থ্যকর’ খাবারেও কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক চিনি বেশি থাকে যেমন: ফলের রস, স্মুদি, গ্র্যানোলা, লো-ফ্যাট প্রোডাক্ট, অতিরিক্ত হোল গ্রেইন। শরীর যেকোনো ধরনের কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তর করে।

২) ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স: শরীরের কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি কম সংবেদনশীল হলে ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। ফলে গ্লুকোজ রক্তেই থেকে যায়।

৩) খাবারের পরিমাণ ও সময়: স্বাস্থ্যকর খাবারও বেশি পরিমাণে খেলে সমস্যা হতে পারে। খাবারের মধ্যে দীর্ঘ বিরতি বা অনিয়মিত সময়ে খাওয়া।

৪) শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা: খাবার পরবর্তী সময়ে শারীরিক সক্রিয়তা না থাকলে পেশী কোষগুলো গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না।

৫) মানসিক চাপ: স্ট্রেস কর্টিসল হরমোন বাড়ায়, যা লিভার থেকে গ্লুকোজ নিঃসরণ ঘটায়। ফলাফল: না খেয়েও সুগার বৃদ্ধি।

৬) ঘুমের অভাব ও অনিয়ম: অপর্যাপ্ত ঘুম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমায়। কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।

৭) ওষুধের প্রভাব: কিছু স্টেরয়েড, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি, থাইরয়েড ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক বা রক্তচাপের ওষুধ।

৮) অন্যান্য শারীরিক অবস্থা: পানিশূন্যতা (রক্ত ঘন হয়ে সুগার কনসেন্ট্রেশন বৃদ্ধি), সংক্রমণ বা প্রদাহ, হরমোনাল ভারসাম্যহীনতা।

সমাধানের উপায়

১) খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত: খাবারের কার্বোহাইড্রেট গণনা করুন, প্রোটিন ও আঁশযুক্ত খাবার সাথে মিলিয়ে খান, ছোট ছোট অংশে বারবার খান, মিষ্টি ফল সীমিত পরিমাণে খান।

২) জীবনযাপন পরিবর্তন: নিয়মিত হালকা ব্যায়াম (খাবারের পর ১৫–২০ মিনিট হাঁটা), পর্যাপ্ত ঘুম (৭–৮ ঘণ্টা), স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট (ধ্যান, যোগব্যায়াম, শ্বাস–প্রশ্বাস ব্যায়াম), পর্যাপ্ত পানি পান।

৩) পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা: নিয়মিত ব্লাড সুগার মনিটরিং, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স পরীক্ষা করান, চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ ঠিক করুন।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ শুধু খাবারের উপর নির্ভর করে না। এটি একটি সামগ্রিক জীবনযাপনের বিষয়। খাবার, ব্যায়াম, ঘুম, মানসিক স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসা- সবকিছুর সমন্বয়ে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে আসে।

যদি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরও সুগার নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে আপনার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিগতকৃত পরিকল্পনা তৈরি করুন।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন