ডেটিং অ্যাপ আর ইনবক্স সম্পর্কের এই যুগে ভালোবাসা এখন অনেকটাই ক্ষণস্থায়ী—এক ক্লিকে শুরু, এক ঘণ্টায় শেষ। অপেক্ষা, আত্মত্যাগ, প্রতিশ্রুতি—এসব শব্দ যেন আজ শুধুই রূপকথার গল্প। এমন বাস্তবতায় এক নিঃশব্দ ভালোবাসার বিপ্লব নিয়ে হাজির হয়েছে চলচ্চিত্র ‘সাইয়ারা’।
মার্কেটিং হাইপ কিংবা বড় কোনো প্রচারণা ছাড়াই ‘সাইয়ারা’ দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছে। অনেকে বলছেন, বহু বছর পর কোনও সিনেমা এত গভীরভাবে ছুঁয়ে দিয়েছে তাদের মন। চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি—এমন মন্তব্যও ছড়িয়ে পড়েছে দর্শক মহলে।
গল্পটি আবর্তিত হয়েছে আহান পান্ডে নামের এক বিষণ্ণ সুরকারকে ঘিরে, যার জীবনে একদিন আলো হয়ে আসে অনীত পাড্ডা। বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা, ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে এক অসাধারণ সম্পর্ক। তবে গল্প মোড় নেয় তখনই, যখন অনীত আক্রান্ত হয় আলঝেইমারে। স্মৃতি হারিয়ে যায়, কিন্তু আহানের ভালোবাসা অটুট থাকে। সে বিয়ে করে অনীতকে, প্রতিটি অভ্যাস মনে রাখে, এমনকি তখনও, যখন অনীত আর তাকে চিনতে পারে না।
এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা—যেখানে প্রতিদান নয়, পাশে থাকাই প্রধান—‘সাইয়ারা’র সবচেয়ে বড় শক্তি। সম্পর্কের ভঙ্গুরতায় ভরা এই সময়ে যখন ভালোবাসা মানেই হয়ে উঠেছে ইনস্ট্যান্ট সংযোগ, তখন এই সিনেমা বলছে, ভালোবাসা মানে কোনো অবস্থাতেই ছেড়ে না যাওয়া।
হ্যাঁ, ‘সাইয়ারা’ নিখুঁত নয়। অভিনয়ে কোথাও কোথাও কাঁচা ভাব আছে, সংলাপে অতিরিক্ত আবেগও চোখে পড়ে। তবু এই চলচ্চিত্র সময়ের প্রয়োজনীয় এক গল্প বলে, যেখানে ভালোবাসা শুধুই রোমান্স নয়—এটা মানসিক আশ্রয়, সম্পর্কের প্রতি হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাসের এক নতুন আর্তি।