সরকারি চাকরি থেকে সরাসরি অপসারণ বা বরখাস্তের বিতর্কিত বিধান বাতিল করে বিকল্প ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, অসদাচরণের অভিযোগে আর সরাসরি চাকরিচ্যুতি নয়; বরং পেনশনসহ আর্থিক সুবিধা বজায় রেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে যে কাউকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সুযোগ থাকছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গঠিত পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশে এই সংশোধনী আনা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগে, গত ২৫ মে জারি হওয়া মূল অধ্যাদেশে চার ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের ক্ষেত্রে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই কেবল কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের অপসারণের বিধান ছিল। এ ধারা ঘিরে তীব্র আন্দোলন শুরু হলে ৪ জুন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়। তাদের সুপারিশে নতুন খসড়া প্রণয়ন হয়।
বর্তমান আইন অনুযায়ী, ২৫ বছর চাকরির পর জনস্বার্থে কাউকে কারণ না দেখিয়ে অবসরে পাঠানোর বিধান থাকলেও তা প্রায় অকার্যকর ছিল। সংশোধনীর ফলে ধারা আরও কার্যকর ও সময়সাশ্রয়ী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া অনুপস্থিতির বিষয়ে নতুন ব্যাখ্যা যোগ হচ্ছে। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কর্মস্থলে না থাকলেও সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, “সবচেয়ে বিতর্কিত ‘অনানুগত্য’ ধারা বাদ দেওয়ায় মূল সমস্যা কেটে গেছে। কারণ দর্শানো, তদন্ত কমিটি এবং নারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে নারী সদস্য রাখার প্রস্তাবও সরকার গ্রহণ করেছে।”
সংশোধনীটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই শেষে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। অনুমোদনের পর তা কার্যকর হবে।