স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা–বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে বিশেষ চিরুনি অভিযান।
তিনি বলেন, নির্বাচনপূর্ব সময়ে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই অভিযান অত্যন্ত জরুরি। সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক চোরাচালান, নারী নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মিটফোর্ড এলাকায় সম্প্রতি সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এ ধরনের বর্বর ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি জানান, এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৯ জন আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় কেউ ৯৯৯–এ ফোন করেনি এবং আশপাশে থাকা আনসার সদস্যদেরও জানানো হয়নি। ঘটনার তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো গাফিলতি ছিল কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “অপরাধী যারাই হোক না কেন, কাউকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হবে না। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” তিনি জানান, সোহাগ হত্যার বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুলনায় আরেকটি হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের তথ্যও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “সরকার চায় নির্বাচনপূর্ব সময়ে কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে। এ লক্ষ্যে চিরুনি অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার লক্ষ্যেই এই অভিযান।”
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১০ জুলাই) মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে, ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে ও বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম উঠে এসেছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো অভিযুক্ত কয়েকজনকে বহিষ্কার করেছে।