রাজধানীর উত্তরা রাজলক্ষ্মী মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত বাসচালক আলমগীর হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলনের উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। তবে পরিবারের আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত লাশ উত্তোলন সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) আদালতের নির্দেশে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের কাজিরখিল গ্রামে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বীন আল জান্নাত, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) হালিম সরকারসহ পুলিশের একটি দল। তবে পরিবারের অনিচ্ছার মুখে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে ফিরে আসেন তারা।
নিহত আলমগীর হোসেন নোয়াখালীর বাসিন্দা। জীবিকার তাগিদে তিনি ঢাকায় বাসচালক হিসেবে কাজ করতেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট উত্তরা রাজলক্ষ্মী মোড়ে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। ঘটনার পর পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হলে লাশ উত্তোলন ও পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আলমগীরের স্ত্রী হোসনে আরা বলেন, “আমার স্বামী আলমগীর ঢাকায় বাস চালিয়ে সংসার চালাতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। তখন আমি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। সেই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয় আমাদের কন্যা আইরা মনি। জন্মের আগেই সে বাবাকে হারিয়েছে। এখন তিন সন্তানকে নিয়ে চোখে-মুখে শুধু অন্ধকার দেখি। প্রতিদিন চোখের জলেই দিন কাটে।”
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হালিম সরকার জানান, “আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা মরদেহ উত্তোলনে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের অনিচ্ছার কারণে তা সম্ভব হয়নি।”
এদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বীন আল জান্নাত বলেন, “শহীদ আলমগীরের কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনে পরিবার সম্মত নয়। তারা আমাদের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে, আলমগীর শহীদ মর্যাদা পেয়েছেন, তাই মরদেহ উত্তোলন করতে চান না। বিষয়টি আদালতকে জানানো হবে। এরপর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”