সঞ্চালন লাইন চালু হলেও এখনই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে না রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আরও দুই বছর সময় দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ পেতে অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো।
মূল চুক্তি অনুযায়ী রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবর এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালের অক্টোবর চালুর কথা ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশেষজ্ঞদের যাতায়াতে বাধা এবং যন্ত্রাংশ সরবরাহে বিলম্বের কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি ব্যাহত হয়।
চলতি বছরের ২০ জুন রাশিয়ার সঙ্গে নতুন একটি চূড়ান্ত চুক্তি সই হয়েছে। তাতে প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর এবং দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়ার অর্থ ও কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট।
পরমাণু শক্তি কমিশন জানিয়েছে, মেয়াদ বাড়লেও মূল ব্যয় বাড়ানো হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে চলমান পরিচালন ব্যয় চালিয়ে যেতে হচ্ছে, যার প্রভাব শেষ পর্যন্ত বিদ্যুতের ইউনিটমূল্যে পড়বে।
প্রকল্প পরিচালক মো. কবীর হোসেন বলেন, “মহামারি ও যুদ্ধের কারণে দেরি হয়েছে। এখন কাজ স্বাভাবিকভাবে এগোচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছর ধাপে ধাপে উৎপাদন শুরু হবে।”
এদিকে জাতীয় গ্রিডে সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চালন লাইন জুন মাসেই চালু হয়েছে। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চুল্লিপাত্রে জ্বালানি ঢোকাতে ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর অন্তত ছয় মাস পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলবে। ফলে আগামী বছরের জুনের আগে বাণিজ্যিক উৎপাদনের সম্ভাবনা কম।
রূপপুর প্রকল্পে স্থাপিত হয়েছে রাশিয়ার তৈরি দুইটি ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি, যা তৃতীয় প্রজন্মের (Generation III+) পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পের প্রধান ঠিকাদার।