Ridge Bangla

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে খারাপ হয়ে উঠছে ট্রাম্প-পুতিন সম্পর্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্পর্ক এখন আর আগের মতো উষ্ণ নেই। যুদ্ধ থামানোর অনুরোধ বারবার উপেক্ষিত হওয়ায় পুতিনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। রাশিয়ার ট্যাবলয়েড মস্কোভস্কি কমসোমোলেটস–এর বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যকার দূরত্ব বাড়ছে। উভয়েই নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও সরতে রাজি নন। ট্রাম্প একাধিকবার পুতিনকে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে একাধিকবার দূত স্টিভ উইটকফকে মস্কো পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পুতিন তার অবস্থান বজায় রেখেছেন এবং যুদ্ধবিরতির কোনো ইচ্ছাও প্রকাশ করেননি।

এদিকে ইউক্রেনের দিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলে নতুন একটি গ্রাম দখলের দাবি করেছে মস্কো। একই সময়ে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, রাশিয়ান শাহেদ ড্রোনে ভারতীয় উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে, যা তারা ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে উত্থাপন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে থাকা ট্রাম্প সম্প্রতি শুল্ক ইস্যুতে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ নিয়ে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। রাশিয়া বলেছে, প্রতিটি দেশের নিজস্ব বাণিজ্যিক অংশীদার বেছে নেওয়ার অধিকার আছে এবং ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও অস্ত্র কিনছে, এটা কোনো অন্যায় নয়।

এদিকে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিষিদ্ধকরণ চুক্তি আর মানবে না রাশিয়া। ন্যাটোর রাশিয়াবিরোধী নীতির জবাবে মস্কো আরও কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প ও পুতিনের ফোনালাপের পর অনেকে সরাসরি বৈঠকের আশা করলেও, পরবর্তীতে পরিস্থিতি উল্টো দিকে মোড় নেয়। ট্রাম্প পুতিনকে প্রথমে ৫০ দিনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধের আলটিমেটাম দেন, পরে তা কমিয়ে ১০ দিনে আনেন। এই সময়সীমা চলতি সপ্তাহান্তে শেষ হওয়ার কথা।

মস্কোর এমজিআইএমও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ইভান লোশকারেভ মনে করেন, উইটকফ এবার পুতিনের কাছে এমন এক প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারেন, যা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। একইসঙ্গে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট পেত্র পাভেল মনে করেন, ইউক্রেনের আঞ্চলিক কিছু ক্ষতি মেনে নেওয়া উচিত, টিকে থাকার স্বার্থে।

অন্যদিকে, ইউরোপীয় দেশ নরওয়ে, সুইডেন ও ডেনমার্ক ইউক্রেনের জন্য যৌথভাবে ৪৩০ মিলিয়ন ইউরোর একটি সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এর আগে নেদারল্যান্ডস যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অস্ত্র কেনার জন্য ইউক্রেনকে ৫০০ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অর্থায়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপকে স্বাগত জানিয়েছে।

সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “মিত্রদের এই অর্থায়ন ইউক্রেনীয় জনগণের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

আরো পড়ুন