Ridge Bangla

রক্তাক্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দিনলিপি: ১৭ জুলাই ২০২৪ | ফিরে দেখা সেদিনের ঘটনাবলী

১৭ জুলাই, ২০২৪ বুধবার—সারা দেশে ছাত্র আন্দোলনের ঢেউ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিতাড়িত করে ক্যাম্পাসগুলোকে ‘রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা করে। সকাল থেকেই রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় শিক্ষার্থীরা সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গায়েবানা জানাজা আয়োজন করতে গেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে কয়েকজন আহত হন। একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। শিক্ষার্থীরা বারবার মিছিল করে এবং সরকারের ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

রাত সাড়ে সাতটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি উচ্চ আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে এবং কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরপরই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। রাতেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বড় ধরনের সংঘর্ষের সূচনা হয়। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে একজন সাংবাদিকসহ অন্তত কয়েকজন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। উত্তেজিত জনতা যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয়। রাতভর সেখানে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন, আতঙ্কিত এক পরিবেশ বিরাজ করে।

রাতেই সরকারের নির্দেশে দেশে ফেইসবুক বন্ধ করে দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, গুজব রোধ ও সহিংসতা ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ বড় শহরগুলোতেও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। তারা জানায়, নিরপেক্ষ ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। সারা দেশে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা আরও বাড়তে থাকে।

আরো পড়ুন