Ridge Bangla

যৌনপল্লী থেকে উঠে এসে ললিউডের নায়িকা, শেষে স্বামীর গুলিতে মৃত্যু- চক্রান্তে ছিলেন নিজের মা!

পাকিস্তানের লাহোরের হীরামান্ডির নিষিদ্ধপল্লী থেকে উঠে এসে ভাগ্য বদলে দিয়েছিলেন এক তরুণী। যৌনকর্মী মায়ের কোলে জন্ম নিয়ে সেই মেয়ে হয়েছিলেন ললিউডের অন্যতম জনপ্রিয় ও উচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী। কিন্তু জীবন যাত্রার সেই দুরন্ত উত্থানের পরিণতি হয় নির্মম ট্র্যাজেডিতে—স্বামীর গুলিতে মৃত্যু, আর অভিযোগের কেন্দ্রে থাকেন তার নিজের মা।

এই অভিনেত্রীর জন্মনাম ছিল নিজ্ঞো, তবে সিনেমার পর্দায় তিনি পরিচিত হন নার্গিস বেগম নামে। হীরামান্ডির অন্ধকার গলিতে তার জন্ম। মা ছিলেন পেশাদার যৌনকর্মী ও দক্ষ মুজরানৃত্যশিল্পী। ছোটবেলা থেকেই নার্গিস নাচ ও গান শিখে মায়ের পথ অনুসরণ করে মুজরায় অংশ নিতে শুরু করেন।

একদিন এক পারফরম্যান্সে তাকে দেখে মুগ্ধ হন এক চলচ্চিত্র প্রযোজক। সেখান থেকেই শুরু হয় তার সিনেমায় যাত্রা। অল্প সময়েই ললিউডের রুপালি পর্দায় তিনি হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় নাম। তখনই তিনি প্রেমে পড়েন প্রযোজক খজা মাজহার-এর সঙ্গে এবং বিয়ে করেন তাকে।

কিন্তু এই বিয়ে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি নার্গিসের মা। তার প্রত্যাশা ছিল, মেয়ে তারই পেশা ধরে রাখবে। মা শুরু করেন ষড়যন্ত্র—ছলচাতুরী করে মেয়েকে স্বামীর ঘর থেকে ফিরিয়ে আনেন হীরামান্ডিতে। অসুস্থতার ভান করে মেয়েকে বাধ্য করেন কোঠায় থাকতে।

মাজহার বারবার নার্গিসকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়েছেন, কিন্তু মায়ের প্রভাব তখনও প্রবল। অবশেষে ১৯৭২ সালের ৫ জানুয়ারি, মাজহার শেষবারের মতো কোঠায় যান স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে রাগের মাথায় বন্দুক বের করে গুলি করেন নার্গিসকে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন এই অভিনেত্রী, আর সেখানেই থেমে যায় তার জীবন।

নার্গিসের মৃত্যুকে ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক—এটি কি কেবল এক উত্তেজিত স্বামীর কাজ? নাকি নেপথ্যে ছিল মা-ই? সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া না গেলেও, তার জীবন হয়ে রইল ললিউডের সবচেয়ে বেদনাবিধুর অধ্যায়।

এক নিষিদ্ধ গলি থেকে উঠে এসে পুরো জাতির ভালোবাসা পাওয়া নার্গিস বেগম শেষ পর্যন্ত হয়ে রইলেন এক নিঃসঙ্গ ট্র্যাজিক নায়িকা—সব পেয়েও যার শেষটা হলো ভয়াবহ পরিণতির শিকার।

আরো পড়ুন