সরকারি মালিকানাধীন জ্বালানি বিপণন প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের তেল পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিনব জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে। খুলনার দৌলতপুর ডিপো থেকে ডিজেল পরিবহনের জন্য ভাড়া নেওয়া একটি ট্যাংকলরির প্রকৃত ধারণক্ষমতা সাড়ে ১৩ হাজার লিটার হলেও চুক্তিপত্রে সেটিকে মাত্র ৯ হাজার লিটার হিসেবে দেখানো হয়।
২৭ জুলাই মেসার্স আছিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন ট্যাংকলরিটির সঙ্গে যমুনা অয়েল চুক্তি করে। কয়েকদিন পর বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ডিজেল পৌঁছালে কর্তৃপক্ষ লরিটির সক্ষমতায় অসামঞ্জস্য খুঁজে পায় এবং তেল গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। বিষয়টি সামনে আসতেই চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
যমুনার নথিপত্রে দেখা যায়, লরিটির ধারণক্ষমতা ৯ হাজার লিটার উল্লেখ করে একটি বিএসটিআই সনদ জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিএসটিআই খুলনা বিভাগীয় কার্যালয় জানায়, সেই সনদ ভুয়া এবং সেখানে ব্যবহৃত কর্মকর্তার স্বাক্ষরও জাল। আরও তদন্তে দেখা যায়, সনদে থাকা কিউআর কোড অন্য একটি গাড়ির প্রতিবেদনের সাথে মিলে গেছে।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর যমুনা কর্তৃপক্ষ ওই কোম্পানির সাথে তাদের চুক্তি বাতিল করে। তবে চুক্তি বাতিলের তারিখ নিয়ে দেখা দিয়েছে অসঙ্গতি। ৩ আগস্ট চুক্তি বাতিল দেখানো হলেও ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ওই লরি দিয়ে তেল পরিবহন করা হয়েছে। পরে ১৮ আগস্ট নতুন তারিখে আবার বাতিলের চিঠি জারি করা হয়।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুস্তফা কুদরত-ই ইলাহী জানান, লরির ধারণক্ষমতা ও সনদের অসঙ্গতির কারণে এই চুক্তি বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, চুক্তির আগে যাচাই-বাছাই করার কথা থাকলেও কীভাবে এটি হলো তা তদন্ত করে বের করা হবে।
যমুনার কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, বাড়তি ধারণক্ষমতা গোপন করার মূল উদ্দেশ্য ছিল ট্যাংকলরিতে অতিরিক্ত তেল তুলে ডিপোর বাইরে পাচার করা। তাদের ভাষ্য, অতীতে এ ধরনের কৌশলে তেল চুরির ঘটনা ঘটেছে এবং এবারের ঘটনাটিও তারই অংশ।