মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ, ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র প্রতিহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘মঞ্চ ৭১’ নামের একটি নতুন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।
সোমবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বীর প্রতীক) ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জেড আই খান পান্নার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়—”মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু একটি ভূখণ্ড, একটি পতাকা বা জাতীয় সংগীতের নাম নয়; এটি বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা, আত্মত্যাগ ও হাজার বছরের লালিত স্বপ্নের ফসল। অথচ আজ গভীর বেদনা ও উদ্বেগের সঙ্গে দেখতে হচ্ছে, এ ইতিহাসকে বিকৃত করার এবং মুছে ফেলার এক সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “আগস্ট অভ্যুত্থানের পর ঘোষিত কথিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অপমান ও বিকৃত করার প্রয়াস চলেছে।”
‘মঞ্চ ৭১’-এর উত্থাপিত ৫ দফা দাবি:
১. জুলাই ঘোষণাপত্রে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনও বক্তব্য বা ব্যাখ্যা রাখা যাবে না; থাকলে তা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করা হবে।
২. মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা বাদ দিয়ে তথাকথিত নতুন সংবিধান প্রণয়নের যে চেষ্টা চলছে, তা বাঙালি জাতি কখনও মেনে নেবে না।
৩. কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যর্থতার দায়ে সব মুক্তিযোদ্ধাকে দায়ী করা যাবে না।
৪. যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে, ইতিহাস বিকৃত করছে, মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করছে—তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা ও বিচার করতে হবে।
৫. ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানাতে হবে—তারা কী মনে করেন, কী করবেন এবং কী করবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে ‘মঞ্চ ৭১’ হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, এই দাবিগুলো উপেক্ষা করে কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধ ও বীর শহীদদের অসম্মান করে, তবে তারা রাজধানী ঢাকায় গণজাগরণমূলক কর্মসূচি ঘোষণা করবে এবং প্রয়োজনে ইতিহাস রক্ষায় জীবন বাজি রাখতেও প্রস্তুত থাকবে।
সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, “এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। এটি ইতিহাস, স্বাধীনতা ও শহীদের রক্তের প্রতি আমাদের নৈতিক দায়বদ্ধতা থেকে জন্ম নেওয়া একটি ঐতিহাসিক প্রয়াস।”