সাগাইং এখন মিয়ানমারের সবচেয়ে আলোচিত শহরগুলোর একটি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর নজরও এই শহরের দিকে। শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল এই শহর যেন এখন এক মৃত্যুপুরী। চারপাশে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর চাপা পড়া মরদেহের গন্ধে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারে জান্তা সরকারের উদ্যোগ প্রায় অনুপস্থিত। বরং শহরের রাস্তায় আরোপ করা হয়েছে কঠোর কড়াকড়ি, চলছে নিয়মিত তল্লাশি। ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবীরা গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি দিয়ে নিজেরাই উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাগাইং শহরের অন্তত ৮০ ভাগ স্থাপনা ধসে পড়েছে, হাজার হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মান্দালয় শহর থেকে সাগাইংয়ের দূরত্ব মাত্র ৪৫ মিনিট হলেও ভূমিকম্প পরবর্তী ধ্বংসযজ্ঞে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টসহ বেশিরভাগ অবকাঠামো ভেঙে গেছে। ফলে খাদ্য, পানীয় এবং জরুরি সামগ্রী পৌঁছানো কঠিন হয়ে উঠেছে।
৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ১৪৫ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে ঠিক কতজন চাপা পড়ে আছেন, তা নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ভূমিকম্পের পর মানুষের মনে এখনো ভয় কাটেনি। অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় রাত কাটাচ্ছেন মাঠ বা উন্মুক্ত স্থানে। সব মিলিয়ে সাগাইংয়ের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে আছেন।
এদিকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও জান্তা সরকার বিভিন্নভাবে তা বাধাগ্রস্ত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবমিলিয়ে মিয়ানমারের মানুষের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে ভয়াবহ ও করুণ এক অভিজ্ঞতা।