Ridge Bangla

মামলার পাহাড়ে চাপা পড়া দুদকের ৯ মাসে নিষ্পত্তি মাত্র ৫টি মামলা

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগের স্রোত বেড়েই চলেছে। তিন শতাধিক প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ী ও আমলার বিরুদ্ধে বর্তমানে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলছে। তবে মামলার সংখ্যা বাড়লেও নিষ্পত্তির হার বিপর্যয়করভাবে কমে গেছে।

দুদক সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৫২৫টি অনুসন্ধান এবং ২৯৭টি মামলা হয়েছে। কিন্তু এই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৫টি মামলা। তুলনায় ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে নিষ্পত্তি হয়েছিল ২২৩টি এবং তার আগের বছরে ৬৬৩টি মামলা। অর্থাৎ, নিষ্পত্তির হার বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।

দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল সংকট এবং মামলার জটিলতা এই ধীরগতির প্রধান কারণ। একেকজন তদন্ত কর্মকর্তা ৪ থেকে ৫টি বড় অনুসন্ধান বা মামলার কাজ একসাথে করছেন। এতে মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।

দুদকের এক উপপরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ভালো কাজ করেন এমন কর্মকর্তাদের ওপর চাপ বেশি। ফলে মনোযোগ ধরে রাখা এবং সময়মতো কাজ শেষ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সহযোগী এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ বড় বড় শিল্পগোষ্ঠী কিংবা সরকারের সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল কাজ। এদের অনেকেই বিদেশে বিপুল সম্পদ পাচার করেছে, যা খুঁজে বের করতে সময় বেশি লাগে।”

কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, অনুসন্ধান শেষ করতে ৭৫ দিন এবং তদন্ত শেষ করতে ২৭০ দিন সময় নির্ধারিত। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ মামলাই নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেছে।

আরও জানা গেছে, গত আগস্ট থেকে প্রতিমাসে গড়ে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ অভিযোগ জমা পড়ছে। তবে সীমিত সংখ্যক অভিযোগই অনুসন্ধানে রূপ নেয়।

দুদক সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। বর্তমানে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ, অর্থপাচার, জালিয়াতি ও আত্মসাতের অভিযোগে প্রায় ৩০০ জন প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মামলা ও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন