মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে ২০২৪ সালের ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ইতিহাস অধ্যায় অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া আটকে দিয়েছিলেন সদ্য অপসারিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জুবায়ের। সরকার ও ন্যাশনাল কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটি (এনসিসি)-র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ইতিহাস ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে এই অধ্যায় যোগ করার পরিকল্পনা ছিল। তবে সচিব জুবায়েরের অপসারণের পর প্রক্রিয়াটি আবারও শুরু হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক ঘটনাকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির কিছু বইয়ে ‘জুলাই আন্দোলন’-সংক্রান্ত খণ্ডিত অংশ ও সময়ের গ্রাফিতি যোগ করা হয়। পরিকল্পনা ছিল, ২০২৬ থেকে ষষ্ঠ-দশম শ্রেণির বইয়ে ধারাবাহিকভাবে একটি পৃথক অধ্যায় আকারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুন অনুষ্ঠিত এক সভায় ‘জুলাই অধ্যায়’ সংযোজনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। কিন্তু সাবেক সচিব জুবায়ের সেটি আটকে দেন। তার যুক্তি ছিল—পাঠ্যবইয়ে নতুন অধ্যায় যুক্ত করতে হলে উচ্চতর পর্যায়ের অনুমোদন প্রয়োজন। এমনকি অপসারণের দুদিন আগে তিনি জানান, সময়ের অভাবে নতুন অধ্যায় যোগ করা সম্ভব নয়।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, এর আগেও পাঠ্যবইয়ে ‘জুলাই অধ্যায়’ অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়ায় কিছু কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ হয়েছে। তারা নতুন কারিকুলামের দায়িত্বে থেকেও বিষয়টির অন্তর্ভুক্তি বাধাগ্রস্ত করেছেন। এছাড়া সিদ্দিক জুবায়েরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও বই সংক্রান্ত কেনাকাটায় অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে।
সাবেক সচিবের অপসারণের পর আবারও ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ইতিহাস ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধ্যায় সংযোজনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক অধ্যায়কে পাঠ্যক্রমে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করবে।