খুলনার দাকোপ উপজেলার শান্ত আচাভুয়া খ্রিস্টান পল্লীতে সম্প্রতি ঘটে গেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী বিয়ের ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের সূত্র ধরে এক চীনা যুবক এবং এক বাংলাদেশি তরুণীর সম্পর্ক পরিণয়ে গড়িয়েছে, যা এখন এলাকাবাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
চীনের সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দা ঝাং বুথাও পেশায় একজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী। আর তার জীবনসঙ্গিনী পিংকি সরকার খুলনার আচাভুয়া গ্রামের অধিবাসী। প্রযুক্তির সহায়তায়—বিশেষ করে গুগল ট্রান্সলেটর ও বিভিন্ন ভাষা অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে—দুজনের মধ্যে নিয়মিত অনলাইন কথোপকথন হতে থাকে। ভাষাগত ব্যবধান কোনোদিন তাদের সম্পর্কের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
প্রেমের টানে গত জুনের শেষ দিকে ঝাং বাংলাদেশে আসেন। এরপর ২৯ জুন তারা নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করেন এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় রীতিতে পিংকিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেন।
পিংকির বাবা স্বপন সরকার, পেশায় একজন ভ্যানচালক, বলেন, “প্রথমে ভাষা বুঝতে সমস্যা হতো, তবে মোবাইল অ্যাপসের সাহায্যে এখন ভালোভাবে কথা বলতে পারি। বুথাও খুব ভালো মনের ছেলে।”
ঝাং বুথাও বলেন, “পিংকি ও তার পরিবার খুব আন্তরিক। এখানকার মানুষজনও খুব বন্ধুবৎসল। আমি এখানে খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।”
নবদম্পতির হাস্যোজ্জ্বল উপস্থিতি গ্রামের মানুষজনের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই তাদের একনজর দেখতে ছুটে আসছেন। পিংকি জানান, “আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান অনলাইনে দেখেছেন। তারা খুব খুশি। ভবিষ্যতে চাইলে চীনে যেতে পারি, আর যদি না যাই, ঝাং এখানেই ছোট ব্যবসা শুরু করতে চায়।”
এই আন্তর্জতিক ভালোবাসার গল্প আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে—ভাষা, সংস্কৃতি কিংবা দেশ কোনো কিছুই ভালোবাসার বন্ধনকে আটকে রাখতে পারে না। আন্তরিকতা ও প্রযুক্তির সহায়তায় সত্যিকারের সম্পর্ক সব প্রতিকূলতা জয় করতে পারে।