ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার একদিন পর বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, নয়াদিল্লি-মস্কোর সম্পর্ক নিয়ে তিনি মোটেও চিন্তিত নন। এ দুই দেশ চাইলে তাদের মৃতপ্রায় অর্থনীতি একসঙ্গে ডোবাতে পারে।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করে, আমি তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। তারা চাইলে তাদের মৃতপ্রায় অর্থনীতি একসঙ্গে ডোবাতে পারে—তাতে আমার কিছু যায় আসে না।”
তিনি আরও লেখেন, “ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা খুবই সীমিত, কারণ তাদের শুল্কহার বিশ্বের মধ্যে অন্যতম উচ্চ। রাশিয়ার সঙ্গেও আমাদের বাণিজ্য নেই বললেই চলে, এবং আমি চাই সেটাই বজায় থাকুক।”
ট্রাম্প বলেন, “ভারত অনেক আগে থেকেই অযৌক্তিক ও অ-মূল্যভিত্তিক বাণিজ্য বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে, যার ফলে আমাদের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য কখনোই খুব বেশি হয়নি। এছাড়া তারা মূলত রাশিয়ার কাছ থেকেই সামরিক সরঞ্জাম কেনে এবং চীনের সঙ্গে মিলিয়ে রাশিয়ার অন্যতম বড় জ্বালানি ক্রেতা। অথচ এই মুহূর্তে সবাই চায় রাশিয়া ইউক্রেনে রক্তপাত বন্ধ করুক।”
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “রাশিয়ার ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট—যিনি নিজেকে এখনো প্রেসিডেন্ট ভাবেন—(দিমিত্রি) মেদভেদেভকে বলো তার ভাষা সংযত করুক। সে এখন একেবারে বিপজ্জনক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে।”
এর আগে মেদভেদেভ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্পের কৌশল নিয়ে কটাক্ষ করেন। তিনি লিখেছিলেন, “প্রতিটি আল্টিমেটাম একধরনের হুমকি এবং যুদ্ধের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। এই কৌশল রাশিয়া-ইউক্রেন নয়, বরং ট্রাম্পকে তার নিজের দেশের সঙ্গেই যুদ্ধের পথে টেনে নিতে পারে।”
ট্রাম্প সম্প্রতি দাবি করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ থামানোর জন্য তিনি পুতিনকে ৫০ দিনের বদলে মাত্র ১০ বা ১২ দিনের সময় দিতে প্রস্তুত।
ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সরকার জানিয়েছে, তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক মাস ধরে একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিক লাভজনক দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই লক্ষ্যেই অটল। সরকার আমাদের কৃষক, উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।”