Ridge Bangla

ভারতে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ৩৭ লাখ মানুষ

ভারতে পথকুকুরের কামড়ে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। চলতি ২০২৪ সালে ইতিমধ্যে ৩৭ লাখের বেশি মানুষ কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদাম্বরম বিষয়টিকে ‘আর অবহেলা করার সুযোগ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন।

তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা আসনের লোকসভার এ সদস্য মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এটা আর অবহেলা করা যাবে না!’’ তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।

লোকসভায় এক লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় পশুপালন, মৎস্য ও দুগ্ধমন্ত্রী এস পি সিং বাঘেল জানান, ২০২৪ সালে (এখন পর্যন্ত) কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৬ বার। এ ছাড়া মানব রেবিসে সন্দেহভাজন মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫৪ জনের। এই তথ্য নেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল রেবিস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের সর্বশেষ উপাত্ত থেকে।

মন্ত্রী জানান, রাজ্যগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে পশুদের জন্য রেবিস টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে। তবু রেবিস এখনো ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। বিশ্বজুড়ে রেবিসে যত মৃত্যু হয়, তার ৩৬ শতাংশই ঘটে ভারতে। প্রতিবছর ১৮–২০ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যায়, যার বড় অংশই শিশু। অথচ এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। কেন্দ্র সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে রেবিসমুক্ত করার লক্ষ্য ঠিক করেছে।

এদিকে কর্ণাটক রাজ্যে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত কর্ণাটকে কুকুরের কামড়ের শিকার হয়েছেন অন্তত ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ এবং ১৯ জন মারা গেছেন। পুরো ২০২৪ সালে রাজ্যটিতে ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হয়েছেন, মারা গেছেন ৪২ জন।

বেঙ্গালুরু সিটি করপোরেশন (বিবিএমপি) শহরের ৪ হাজার পথকুকুরকে খাওয়ানোর জন্য ২ কোটি ৮৮ লাখ রুপির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কর্তৃপক্ষের মতে, কুকুরদের নিয়মিত খাওয়ানো হলে তাদের সহজে ধরে বন্ধ্যাকরণ ও রেবিস টিকাদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে।

কেরালায় নেওয়া হচ্ছে আরও কঠোর ব্যবস্থা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এম বি রাজেশ জানিয়েছেন, রাজ্যের ১৫২টি ব্লকে মোবাইল স্টেরিলাইজেশন ইউনিট চালু হবে। গুরুতর অসুস্থ কুকুরগুলোকে ইউথেনাইজ করারও অনুমতি দেওয়া হবে। এ বছর এপ্রিল থেকে রাজ্যে কুকুরের কামড়ে চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যদিও তারা রেবিসের টিকা পেয়েছিল।

এ ছাড়া কেরালার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগ স্কুল পর্যায়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু করেছে। ৩০ জুন থেকে স্কুলগুলোতে রেবিস প্রতিরোধ বিষয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে ১৫৮ জন প্রশিক্ষিত কর্মী রাজ্যে কুকুর ধরার কাজে নিযুক্ত হয়েছে।

আরো পড়ুন