দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করতে সরকার বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করলেও তা ঝুঁকিতে পড়বে না, বরং মুনাফাসহ ফেরত আসবে—এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার নিজের ‘আমলের’ দ্বিতীয় মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতি উপস্থাপন করেন তিনি। এসময় ব্যাংক একীভূতকরণ, ডলার বাজার ও অর্থ পাচার নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করেন গভর্নর।
তিনি বলেন, “যেসব ব্যাংক একীভূত হবে, তাদের আমানত পুরোপুরি নিরাপদ। প্রত্যেকেই তার জমানো টাকা ফেরত পাবেন, কারণ সরকার এ প্রক্রিয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা দেবে। একীভূতকরণের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে। সরকারের যে বিনিয়োগ এতে থাকবে, তা লাভজনক প্রমাণিত হবে এবং সরকার লাভসহ সেই অর্থ ফেরত পাবেন।”
ইসলামী ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে বলে মনে করি। ব্যাংকগুলোকে আমরা এক বছরের মতো সময় দিয়েছি এবং এসব ব্যাংকের সামনে সম্ভাবনাময় হিসেব দেখছি।”
পদ্মা ব্যাংককে ‘অচল ব্যাংক’ আখ্যা দিয়ে গভর্নর বলেন, “এটিকে সচল করতে হবে। হয়তোবা এটিকে মার্জ করে দেওয়া লাগবে। বর্তমানে আমরা ১৫ থেকে ২০টি ব্যাংকে হস্তক্ষেপ করছি। প্রথম ধাপে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করছি। সফল হলে পরে আরও পাঁচ বা দশটি ব্যাংককে একই প্রক্রিয়ায় আনা হবে।”
ডলারের দর নিয়েও বক্তব্য দেন গভর্নর। তিনি বলেন, “কৃত্রিমভাবে তারল্য বাড়ানো যাবে না। দরকার হলে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কেনা হবে। ইতোমধ্যে অর্ধ বিলিয়ন ডলার বাজার থেকে কেনা হয়েছে, যার ফলে বাজারে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা তারল্য সরবরাহ হয়েছে।”
রপ্তানি খাতের ভবিষ্যৎ ও বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নতুন বিনিয়োগ না বাড়লে রপ্তানি টিকবে না। তবে তৈরি পোশাক শিল্প এখনও সক্ষম। ডলার সরবরাহ ঠিক রাখতে, বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিকে সচল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে।”
বিদেশে অর্থ পাচার প্রসঙ্গে গভর্নর জানান, “পাচারের প্রবণতা অনেকটাই কমে এসেছে। তবে বিদেশ থেকে অর্থ ফেরত আনতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া দরকার হয়। অনেক দেশেই এটি সময়সাপেক্ষ। পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির মাধ্যমে আমরা কাজ করছি। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বহু অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে।”