সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের গুলশানের বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে থাকা পারিবারিক আসবাব ও ব্যক্তিগত ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। ঢাকার গুলশানের র্যাঙ্কন টাওয়ারের চারটি আধুনিক ফ্ল্যাট একত্র করে তৈরি করা হয় বেনজীরের ডুপ্লেক্স ইউনিটটি, যার ভেতরে ছিল চোখ ধাঁধানো পরিমাণ মালামাল।
সোমবার (২১ জুলাই) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের গঠিত নিলাম কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, খুব শিগগিরই জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিলামের প্রক্রিয়া শুরু হবে। কমিটির একজন সদস্য বলেন, “এ যেন ইমেলদা মার্কোসের সংগ্রহশালার মতো চমকে দেওয়ার মতো সংগ্রহ।”
জব্দ তালিকা অনুযায়ী, ফ্ল্যাটটিতে রয়েছে ২৪৬টি আইটেম—যার মধ্যে রয়েছে ১২২টি শার্ট, ২৬৬টি প্যান্ট, ৭২২টি টি-শার্ট, ৪৯৪টি শাড়ি, ৪৯৬টি সালোয়ার-কামিজ, ৬২২টি লেডিস টপস, ৩৫৫টি লেডিস প্যান্ট, ৩৪৭টি ওড়না, ১৩২টি শীতের জামা, ৭৫টি লেডিস ব্যাগ, ৮৮ জোড়া স্যান্ডেল, ৩৮ জোড়া জুতা, ৩৫ জোড়া কেডস, ১৯টি ফ্রিজ এবং ১০০ টনের এয়ার কন্ডিশনার। এ ছাড়া ফ্ল্যাটটিতে রয়েছে সুইমিংপুল ও মিনি থিয়েটারসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানায়, বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশত্যাগের সময় স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ সঙ্গে নিয়ে যান। ইতিমধ্যে বেনজীরের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে। তার স্ত্রী জিশান মীর্জা ও দুই কন্যার বিরুদ্ধেও প্রায় ৭৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে।
নিলাম প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করবেন দুদকের একজন পরিচালক, যিনি কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তার সঙ্গে থাকবেন বস্ত্র ও ইস্পাত অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতিনিধি এবং দুদকের একজন উপপরিচালক।
দুদকের মামলায় বেনজীরের বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।