Ridge Bangla

বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ শুরু করেছে চীন

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে চীনের নতুন মেগা প্রকল্প—বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ। তিব্বতের ইয়ারলুং সাংপো নদীর ওপর এই বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং। শনিবার (১৯ জুলাই) এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একে ‘শতাব্দীর প্রকল্প’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

লি চিয়াং জানান, বিশাল এই অবকাঠামো চীনের নবম পুনর্গঠনের অংশ, যা ২০২০ সালের ১৪তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রকল্পটির আওতায় নদীর নিম্নপ্রবাহে পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে, যা থেকে বছরে ৩০০ মিলিয়ন মেগাওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান।

এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ হিসেবে পরিচিত থ্রি গর্জেস প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল ২৫৪.২ বিলিয়ন ইউয়ান এবং তা বছরে উৎপাদন করে ৮৮.২ মিলিয়ন মেগাওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ। তুলনামূলকভাবে নতুন প্রকল্পটি প্রায় চার গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে।

তবে চীনের এই প্রকল্প ঘিরে উদ্বেগ বাড়ছে ভাটির দেশ ভারত, বাংলাদেশ এবং তিব্বতের পরিবেশবাদীদের মধ্যে। কারণ ইয়ারলুং সাংপো নদী ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করে যথাক্রমে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নামে পরিচিত। বিশাল এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ, পানির প্রবাহমানতা এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, এত বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ভবিষ্যতে ভাটির দেশগুলোর পানির নিরাপত্তা ও কৃষিনির্ভর জীবনযাত্রার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অপরদিকে চীন এটিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের অংশ হিসেবে তুলে ধরছে, যা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা আনবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ প্রকল্প কেবল চীনের জ্বালানি খাতে নয়, ভৌগোলিক কৌশলগত ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তৈরি করতে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন