Ridge Bangla

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগেই এয়ার ইন্ডিয়ার জ্বালানির সুইচ বন্ধ হয়েছিল

ভারতের আহমেদাবাদে সম্প্রতি বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি আকাশে উড্ডয়নের মাত্র তিন সেকেন্ডের মধ্যেই জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ সুইচ অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এতে বিমানের দুটি ইঞ্জিনই হঠাৎ করে শক্তি হারিয়ে বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে কমপক্ষে ২৬০ জন যাত্রী প্রাণ হারান। শুক্রবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে জমা দেওয়া প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্ল্যাক বক্স থেকে পাওয়া ককপিট ভয়েস রেকর্ডিংয়ে এক পাইলট অপর পাইলটকে জিজ্ঞাসা করতে শোনা যায়, “তুমি কেন বন্ধ করলে?” উত্তরে অপর পাইলট বলেন, “আমি করিনি।” এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, সুইচ দুটি অনিচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ইঞ্জিনের ফুয়েল কাটঅফ সুইচ একে একে ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’ অবস্থানে চলে যায়।

তদন্তে জানা গেছে, ২৬ মার্চ বাঁ পাশের ইঞ্জিন এবং ১ মে ডান পাশের ইঞ্জিনটি সংযোজন করা হয়। তবে ২০২৩ সালের পর থেকে এই বিমানটির জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি পাওয়া যায়নি। এক ইঞ্জিন আংশিকভাবে থ্রাস্ট পুনরুদ্ধার করলেও অপর ইঞ্জিন তা করতে পারেনি। পাইলটরা এরপর ‘মেডে’ সংকেত পাঠান।

যুক্তরাষ্ট্রের এভিয়েশন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জন কক্স বলেন, “এই ধরনের ফুয়েল কাটঅফ সুইচ সাধারণত হালকা ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা নয়। এগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যে শুধু ইচ্ছাকৃতভাবে এবং নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায়ই বন্ধ করা যায়।” তিনি বলেন, সাধারণত এই সুইচগুলো কেবল গন্তব্যে পৌঁছানোর পর অথবা জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হয়, যেমন ইঞ্জিনে আগুন লাগলে।

প্রতিবেদন আরও উল্লেখ করে, ২০১৮ সালে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এক তথ্য বুলেটিনে সতর্ক করেছিল যে কিছু পরিস্থিতিতে ফুয়েল সুইচের লকিং ফিচার অকার্যকর হয়ে যেতে পারে, তবে সেটিকে বড় ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি এবং পরিদর্শন বাধ্যতামূলকও করা হয়নি। ফলে এয়ার ইন্ডিয়া সেই পরামর্শ অনুসারে কোনও পরিদর্শন কার্যক্রম নেয়নি।

এ বিষয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে, তবে তদন্ত চলমান থাকায় এই বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা হচ্ছে না।

আরো পড়ুন