ষাটের দশকের বলিউড তখনও খোলামেলা পোশাককে সহজভাবে নিতে প্রস্তুত ছিল না। হাতে গোনা কয়েকজন অভিনেত্রী সাহস করে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেও বেশিরভাগই তা এড়িয়ে যেতেন। ঠিক সেই সময়েই নিয়ম ভেঙে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। ১৯৬৭ সালের ছবি ‘অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস’-এ বিকিনিতে তার উপস্থিতি দর্শক ও সমালোচকদের চমকে দিয়েছিল।
তবে এই সাহসী সিদ্ধান্ত মোটেও সহজ ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে শর্মিলা জানান, শুটিংয়ের পর সবচেয়ে বড় ভয় ছিল হবু শাশুড়ির প্রতিক্রিয়া নিয়ে। তিনি বলেন, “বিকিনি পরার পর এত বিতর্ক তৈরি হবে ভাবিনি। পরিচালক আমাকে বলেছিলেন, দর্শক আমাকে নতুনভাবে দেখতে চান, আমাকে সেভাবেই হাজির হতে হবে। তাই নিজেকে মেলে ধরেছিলাম, আকর্ষণীয় হতে চেয়েছিলাম, আর মনে করি তা পেরেছিলামও।”
কিন্তু বিতর্ক ছড়িয়ে পড়তেই অস্বস্তিতে পড়েন অভিনেত্রী। হবু শাশুড়ি কিছু বলবেন ভেবে আতঙ্কে পড়ে যান তিনি। সেই ভয়েই রাতারাতি গাড়িচালককে দিয়ে শ্বশুরবাড়ির আশপাশের সব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলতে বাধ্য হন।
তখন শর্মিলা প্রেমে মগ্ন ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনসুর আলি খান পাতৌদির সঙ্গে। তিনি দেশে না থাকলেও টেলিগ্রামের মাধ্যমে শর্মিলাকে ভরসা দেন। তবে শেষ পর্যন্ত সব ভয়ই অমূলক প্রমাণিত হয়। শর্মিলা হেসে স্মৃতিচারণ করে বলেন, “মা কিছুই বলেননি।”
এই ঘটনার পরও শর্মিলার বিকিনি লুক বলিউড ইতিহাসে এক সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে থেকে গেছে। সেই ছবিই তাকে ভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত করে এবং পরবর্তীতে বলিউডে আধুনিকতা ও মুক্তচিন্তার এক প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করে।