Ridge Bangla

বান্দরবানে আহত হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে বনকর্মী-চিকিৎসকসহ আহত ১৫

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত এক মাদি হাতিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চিকিৎসকরা। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) হাতিটির চিকিৎসা দিতে গেলে আকস্মিক আক্রমণে বন বিভাগের ১৫ জন সদস্য আহত হন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন—কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ, ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ জুলকারনাইন এবং গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

বর্তমানে জুলকারনাইন ও মোস্তাফিজুর রহমান রামু সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আর আলী নেওয়াজ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ জানান, গত রোববার মিয়ানমার সীমান্তে পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটি গুরুতর আহত হয় এবং পরে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে শুক্রবার বন বিভাগের ১৫ সদস্য ও চিকিৎসক দল রামুর দারিয়ারদীঘি সংরক্ষিত বনে যায়, যেখানে হাতিটি আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে পৌঁছানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতিটি হঠাৎ আক্রমণ চালায়। এতে সবাই আহত হন। এমনকি হাতিটি একজনের বন্দুক কেড়ে নিয়ে বনের ভেতরে ছুড়ে ফেলে দেয়, যা পরে উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “আহত হাতিটির চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। বন কর্মীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।”

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, হাতিটির সামনের ডান পা বিস্ফোরণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে, ফলে খুঁড়িয়ে হাঁটছে এবং তীব্র যন্ত্রণার কারণে খাবার সংগ্রহ করতেও কষ্ট হচ্ছে।

চিকিৎসকদের মতে, হাতিটি মারাত্মক রক্ত ও পানিশূন্যতায় ভুগছে এবং দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাকে সুস্থ করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি নিবিড় পরিচর্যা প্রয়োজন।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সরকারও নিশ্চিত করেছেন যে, মিয়ানমারের ভেতরে স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটি আহত হওয়ার পর সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন