Ridge Bangla

বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের শুল্কহার শতভাগ চূড়ান্ত না হলেও দরকষাকষির সুযোগ থাকছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন। তবে বাংলাদেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৪টি দেশের নেতাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন—কোন কোন পণ্যের ওপর কত শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে, তবে তা এখনই কার্যকর হচ্ছে না।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউসের ঘোষণা অনুযায়ী ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু আক্রমণাত্মক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত ছিল। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্প নতুন করে ১ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকরের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এই শুল্কহার চূড়ান্ত নয় এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে তা বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, “বিশ্বনেতারা সব সময় ফোন করে চুক্তিতে পৌঁছানোর অনুরোধ করছেন।”

শুল্ক আরোপের ঘোষণায় বাংলাদেশের পাশাপাশি আরও যেসব দেশ রয়েছে, তাদের মধ্যে আছে—জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া ও তিউনিসিয়া। এসব দেশের ওপর শুল্কের হার ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, “আমরা সামনে কয়েকটা ব্যস্ত দিন দেখতে পাচ্ছি। অনেক নতুন প্রস্তাব আসছে, অনেক চুক্তি হতে যাচ্ছে।” অর্থনীতিবিদদের মতে, এই ধরনের শুল্ক আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান শেয়ার সূচক পড়ে গেছে এবং টয়োটার শেয়ারের দাম কমেছে ৪ শতাংশ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব শুল্ক আরোপের মাধ্যমে ট্রাম্প মূলত যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় শিল্প ও কর্মসংস্থানকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এতে বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠছে। বিশেষ করে গাড়ি ও স্টিল পণ্যকে ঘিরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা আটকে আছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম ও চীনের সঙ্গে আংশিক চুক্তি করেছে, যদিও সেসব চুক্তির আওতায় শুল্ক হার বেড়েছে এবং অনেক বিষয়ে সমাধান আসেনি। ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পথে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। যদিও ইইউ এখনো শুল্কসংক্রান্ত চিঠি পায়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের জন্য এখন দরকষাকষির সুযোগ রয়েছে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কৌশলগতভাবে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে, যেন রপ্তানিমুখী শিল্প ক্ষতির মুখে না পড়ে।

আরো পড়ুন