বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চককল্যাণী গ্রামে কাটাখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে অন্তত ১২টি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পানির চাপে প্রায় ৫০ ফুট বাঁধ ধসে পড়ে। ফলে আশপাশের অন্তত ১২টি গ্রামে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
এই বাঁধটির ওপর দিয়েই শেরপুর ও ধুনট উপজেলার বহু মানুষ চলাচল করতেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কের পাশের দোকানঘর ও গাছপালাও পানির তোড়ে ভেসে গেছে। তারা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি বাঁধ সংস্কারের সময় এর ভেতর অপরিকল্পিতভাবে প্লাস্টিকের পাইপ বসানো হয়েছিল। সেই পাইপ দিয়ে পানি প্রবাহ শুরু হওয়ার পরেই বাঁধটি ভেঙে পড়ে।
চককল্যাণী গ্রামের আমিনুর রহমান জানান, বাঁধ ভেঙে শেরপুর উপজেলার চকধলী, জয়নগর, কল্যাণী, বেলগাছি, আউলাকান্দি ও ধুনট উপজেলার পেঁচিবাড়ি, জালশুকা, বিশ্বহরিগাছা ও ভ্রমণগাথি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কৃষকেরা হাটে ফসল নিতে পারছেন না, রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানোও কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, গত ১৭–২২ জুলাই পর্যন্ত বাঁধের ভেতর দিয়ে প্লাস্টিকের পাইপ বসানো হয়। গতকাল সন্ধ্যায় পানি প্রবাহ শুরু হলে বাঁধ ধসে যায়।
শেরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দাবি করেছেন, বাঁধ সংস্কারে কোনো অনিয়ম হয়নি এবং বরাদ্দকৃত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তবে ইউপি চেয়ারম্যান নূরনবী মণ্ডল জানিয়েছেন, কাজ শুরুতে বিলম্ব ও অপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাই ধসের কারণ।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙা বাঁধের দুই পাশে স্থানীয়দের ভিড়। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে কাজ শুরু হলে এই বিপর্যয় এড়ানো যেত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান জানান, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।