Ridge Bangla

ফিলিস্তিন রক্ষায় ঐক্যের ডাক, ‘মার্চ ফর গাজা’তে ১০ দফা দাবি উত্থাপন

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গাজায় চলমান দখল, গণহত্যা, জাতিগত নিধন ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বাংলা, ইংরেজি ও আরবি—তিন ভাষায় ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পাঠ করা হয়। বাংলা ভাষায় ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘকে অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিন রক্ষায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুর রব, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জাইনুল আবেদীন, আশরাফ আলী আকন, আবদুল হালিম, মুজিবুর রহমান হামিদীসহ অনেকে।

বক্তৃতায় জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা এখন মৃত্যুপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে গোটা জনগণকে অনাহার ও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার শিশু, বৃদ্ধ, সাংবাদিকসহ লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। হাসপাতাল, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদসহ অবকাঠামো ধ্বংস করা হচ্ছে, রাতের আশ্রয়স্থলও লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীদেরও সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। গাজা আজ কসাইখানায় পরিণত হয়েছে, প্রতিদিন নতুন কবর খোঁড়া হচ্ছে, নারী-শিশুর লাশে কবরস্থান ভরে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে যেন গণহত্যার সত্যতা বিশ্বের সামনে না আসে।

তিনি আরও বলেন, এই পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশ্বের বিবেকবান মানুষ রাজপথে নেমেছে। এশিয়া, ইউরোপসহ বিভিন্ন অঞ্চলে গাজার পক্ষে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে উঠেছে, বাংলাদেশও সেই অংশীদার।

সমাবেশে ঘোষিত ১০ দফা দাবি

১. অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
২. জায়নিস্ট ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে।
৩. শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, গণহত্যা রোধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
৪. ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিলিস্তিনকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
৫. পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
৬. ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উম্মুক্ত করতে হবে।
৭. ইসরায়েলি পণ্য, প্রযুক্তি, অস্ত্র ও বিনিয়োগের ওপর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৮. গাজার অবরোধ ভেঙে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. জায়নিস্ট অর্থনীতিকে সহযোগিতা করা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
১০. আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়ে গণহত্যার সত্য বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন