কোটা সংস্কারে দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে ২৩ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নতুন নিয়মে ৯৩ শতাংশ পদ মেধার ভিত্তিতে এবং ৭ শতাংশ পদ কোটায় পূরণ হবে। এ বিধান সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে ৯ম থেকে ২০তম গ্রেডের চাকরিতে কার্যকর হবে।
এদিন দেশে ষষ্ঠ দিনের মতো ইন্টারনেট বন্ধ থাকলেও রাতের দিকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড চালু করা হয়। তবে সবাই সংযোগ পাননি। মূলত জরুরি সেবা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
সারা দেশে সাধারণ ছুটি এবং কারফিউ বহাল থাকলেও পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়, কারফিউ কিছুটা শিথিল করা হয়। ২৪ জুলাই সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস ও রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা সীমিত সময়ের জন্য চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘চিরুনি অভিযান’ চলতে থাকে। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সারা দেশে আরও প্রায় ১ হাজার ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকায় গ্রেপ্তার হন অন্তত ৫১৭ জন। গত এক সপ্তাহে (১৭–২৩ জুলাই) সারা দেশে ৩ হাজারের বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছেন। নতুন করে রাজধানীতে আরও ৩৮টি মামলা দায়ের হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, দাবি মেনে নিলে সংলাপের পরিবেশ তৈরি হবে। দাবিগুলো হলো: কারফিউ প্রত্যাহার, ইন্টারনেট পূর্ণরূপে চালু করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি এবং আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
ছাত্র নেতারা অভিযোগ করেন, ১৮ জুলাই থেকে তিন নেতা নিখোঁজ রয়েছেন। ১ জুলাই শুরু হওয়া আন্দোলন ১৬ জুলাই ছয়জন নিহতের পর সহিংস হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৯ জুলাই থেকে কারফিউ ও সেনা মোতায়েন করা হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “কাউকে অযথা মামলায় জড়ানো হলে তথ্য যাচাই করা হবে।” শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান জানান, “নিরাপত্তা ছাড়া হল খুলবে না।” র্যাব মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, “নাশকতাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।”