Ridge Bangla

ফিরে দেখা রক্তাক্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থান | ৩ আগস্ট ২০২৪

গত ৩ আগস্ট রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা একটি বিশাল জনসমাবেশে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। সমাবেশে হাজারো সাধারণ মানুষ উপস্থিত হয়ে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি জানান।

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী নাহিদ ইসলাম বিকেল ৫টার দিকে ঘোষণা দেন, যা শুধু শেখ হাসিনার নয়, পুরো মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবিসহ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করে। তিনি বলেন, তারা একটি স্বৈরাচারবিহীন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান এবং দেশব্যাপী ‘ছাত্র-জনতার গণ-জাগরণ’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে পেশাজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে সংলাপের প্রস্তাব দেন, যা আন্দোলনকারীরা নাকচ করে দেয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভকারীরা টিএসসি এলাকায় রাজু ভাস্কর্যের চোখ লাল কাপড় দিয়ে বেঁধে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

আন্দোলনের আরেক সমন্বয়কারী আসিফ মাহমুদ সজিব ১৫ দফা ঘোষণা করেন, যার মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি অফিস, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা, জনসাধারণের অসহযোগ আন্দোলন, শ্রমিক ও পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সেদিন সকাল থেকেই বৃষ্টির মধ্যেও লাখো মানুষ শহীদ মিনার ও শহরের বিভিন্ন মোড়ে বিক্ষোভে অংশ নেয়। ঢাকা, সিলেট, কুমিল্লা, রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের বিক্ষোভ চলতে থাকে। তবে পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের সহিংসতা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা হয়।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ওইদিন সেনা সদরদপ্তরে ভাষণে জরুরি পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় সেনাবাহিনীর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। একইদিন ২২ জন মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেস সদস্য বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে চিঠি দেন, যেখানে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।

এই আন্দোলন দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও গণআন্দোলনের নতুন অধ্যায় সূচনা করে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন