Ridge Bangla

পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে নির্মিত হতে যাচ্ছে নতুন রেলসেতু

ঐতিহাসিক হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে একটি নতুন রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে পদ্মা নদীর ওপর শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নতুন সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।

রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, জাপান, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত পরামর্শক দল ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ থেকে ৩০০ মিটার উত্তরে ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলসেতু এবং উভয় পাশে ৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ করা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, “নতুন একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা এখন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে।” প্রকল্পটি বর্তমানে “রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (ADB) অর্থায়নে চলছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকা।

প্রকল্প পরিচালক মো. আবিদুর রহমান জানান, সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত নকশার পর ‘উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব’ (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হবে। এরপর সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে মূল নির্মাণকাজ শুরু হবে।

বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে দিনে গড়ে ২৮টি ট্রেন চলাচল করে, তবে ব্রিজটির শতবর্ষী কাঠামোর কারণে এর গতিসীমা সীমিত—সর্বোচ্চ ২৫ কিলোমিটার। প্রকৌশলীরা মনে করছেন, ডুয়েল গেজ ও ডাবল লাইনের নতুন সেতু নির্মিত হলে পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ আরও গতিশীল ও নিরাপদ হবে।

উল্লেখ্য, ১৯০৮ সালে অবিভক্ত ভারতের সময় পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯১৫ সালে নির্মাণ শেষ হয় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের। এক শতকের বেশি সময় পর, এটি এখনও রেল চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, কিন্তু নিরাপত্তা বিবেচনায় একটি বিকল্প সেতু এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন