Ridge Bangla

পরিবহন খাতে শাজাহান খানের সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু

বাংলাদেশের পরিবহন খাত দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জর্জরিত। এই নৈরাজ্যের অন্যতম নিয়ন্ত্রক ছিলেন সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান। ‘গরু-ছাগল চিনলেই একজন গাড়িচালক লাইসেন্স পেতে পারেন’—এই উক্তিটি যিনি উচ্চারণ করেছিলেন, তিনি আর কেউ নন শাজাহান খান।

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ঘটা সড়ক দুর্ঘটনা, অদক্ষ চালকদের কারণে প্রাণহানি ও ত্রুটিপূর্ণ নিম্নমানের গণপরিবহন বছরের পর বছর রাস্তায় থাকার জন্য দায়ীদের মধ্যে অগ্রগণ্য ব্যক্তি হিসেবে শাজাহান খানকে মনে করেন দেশের বেশিরভাগ মানুষ।

শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে থাকলেও তিনি নিজে পরিবহন শ্রমিক ছিলেন না। অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রী হওয়ার পর প্রভাব খাটিয়ে সারা দেশের পরিবহন খাতকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন এবং শ্রমিক ইউনিয়নের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির এক চক্রাকার জাল গড়ে তোলেন। বিভিন্ন টার্মিনাল ও রুটে চাঁদা তোলাকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন।

পরিবহন মালিকরা বছরের পর বছর এই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ছিলেন। সম্প্রতি ঢাকা সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে যে, শাজাহান খানসহ শীর্ষ কয়েকজন শ্রমিক নেতা গত চার বছরে প্রায় ৬ হাজার ৯৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এর আগেও অভিযোগ ওঠে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তার সিন্ডিকেট পরিবহন খাত থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করেছে। অভিযোগকারীরা বলছেন, চাঁদাবাজি ও অবৈধ অর্থের জোরেই শাজাহান খান রাজধানী ও নিজ জেলা মাদারীপুরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের নামেও রয়েছে বিভিন্ন ব্যবসা ও সম্পত্তি।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পরিবহন খাতে নীতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে ভাড়া নির্ধারণ পর্যন্ত প্রতিটি বিষয়ে শাজাহান খানের প্রভাব ছিল। সরকারের আইন প্রয়োগ প্রক্রিয়া প্রায়ই তার সিন্ডিকেটের কাছে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি করেছেন, দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে হবে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ১১

আরো পড়ুন