বলিউডের জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার শাগুফতা রফিকের জীবনের গল্প যেন এক রূপকথার মতো। সাধারণত আলোচনায় থাকেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা, কিন্তু তাদের পেছনে যাঁরা গল্প গড়ে তোলেন, তাঁদের জীবনের সংগ্রামের কথা অনেক সময়েই অজানা থেকে যায়। শাগুফতার জীবন সেই আড়াল থেকে উঠে এসেছে নিজের মেধা ও অদম্য চেষ্টায়।
শৈশবেই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। মাত্র ১১ বছর বয়সে পরিবারের আর্থিক চাপ লাঘব করতে প্রাইভেট পার্টিতে নাচ শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি মুম্বাইয়ের বার ডান্সার হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন, যেখানে প্রতিরাতে আয় হতো ৭০০ টাকা, অথচ মাসে চলতেন মাত্র ৫০০ টাকায়।
১৭ বছর বয়সে এক ধনী ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়, যা ছিল তার জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর অধ্যায়। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর শাগুফতা পতিতাবৃত্তির অন্ধকার জগতে ঢুকে পড়েন। জীবিকা নির্বাহের জন্য বারবার বার ডান্সার হিসেবে ফিরে যেতে হয় তাঁকে। এমনকি একসময় এই কঠিন সময় পার করতে মুম্বাই থেকে পালিয়ে যেতে হয় দুবাই।
তবুও গল্প বলার প্রতি ভালোবাসা তাকে কখনো ছেড়ে যায়নি। আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ না থাকায় বলিউডে প্রবেশের পথে বারবার প্রত্যাখ্যাত হন তিনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি। একসময় মহেশ ভাটের ‘বিশেষ ফিল্মস’ প্রযোজনা সংস্থায় যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তার জীবনে আসে মোড় ঘোরা সময়।
সেখান থেকেই শুরু তার নতুন পথচলা। তিনি চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করেন ‘উও লমহে’, ‘মার্ডার ২’, ‘জন্নত ২’, ‘আশিকি ২’, ‘জিসম ২’ এবং ‘রাজ ৩ডি’-এর মতো একের পর এক সুপারহিট ছবির জন্য।
শাগুফতা রফিক প্রমাণ করেছেন, যেখানে ভালোবাসা ও প্রতিভা থাকে, সেখান থেকে যেকোনো অন্ধকার পেরিয়ে আলোতে পৌঁছানো সম্ভব। আজ তিনি বলিউডের এক সফল ও প্রভাবশালী চিত্রনাট্যকার হিসেবে পরিচিত। তার সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প অনুপ্রেরণার এক অনন্য উদাহরণ।