Ridge Bangla

নিবন্ধনহীন লাখো গাড়ি, বছরে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

দেশের সড়কে মোটরযান চালাতে নিতে হয় নিবন্ধন। সরকারকে দিতে হয় কর। কিন্তু এক সমীক্ষায় দেখা গেছে দেশের প্রায় আড়াই লাখ মোটরযান চলছে নিবন্ধন ছাড়া। ফলে মালিকরা করের আওতায় না আসায় প্রতিবছর সরকার প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে।

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ তথ্য উঠে আসে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৬৪ লাখের বেশি। তবে এ তালিকার বাইরে থাকা গাড়িগুলো রাষ্ট্রীয় রাজস্ব আহরণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিআরটিএর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিবন্ধনহীন যানবাহন কর ফাঁকির অন্যতম উৎস। এজন্য কিউআর কোডযুক্ত ই-ট্যাক্স টোকেন চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার হলে কর আদায় সহজ হবে, স্বচ্ছতা বাড়বে এবং গাড়ির তথ্য তাৎক্ষণিক যাচাই করা সম্ভব হবে। বর্তমানে চীন, ভারত, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশেই এ ধরনের ডিজিটাল টোল ও ট্যাক্স ব্যবস্থা চালু রয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কেবল বিলাসবহুল গাড়ির ক্ষেত্রেই বিপুল পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ১,৩৩৯ জন মালিক গাড়ির তথ্য গোপন করে এক হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আয়কর আইন অনুযায়ী, গাড়ির ইঞ্জিন ক্ষমতা বা সিসিভিত্তিক বার্ষিক অগ্রিম কর পরিশোধ বাধ্যতামূলক। উদাহরণস্বরূপ, ১,৫০০ সিসির নিচের গাড়ির জন্য বছরে ২৫ হাজার টাকা কর নির্ধারিত। অথচ নিবন্ধনহীন গাড়িগুলোকে কর নেটওয়ার্কে আনতে না পারায় এই অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ই-ট্যাক্স টোকেন এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালু হলে শুধু কর আদায় নয়, দুর্নীতি ও জালিয়াতিও কমবে। তবে এসব কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং মাঠ পর্যায়ে ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ১৬

আরো পড়ুন