বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদী দিন দিন জেলেদের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। নদীতে নামার কথা ভাবলেই কেমন যেন আনমনে অপহরণের কথা মাথায় চলে আসে। আর এই অপহরণের নেপথ্যে রয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গোষ্ঠীটি প্রায় নিয়মিতভাবেই বাংলাদেশি জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যাচ্ছে।
টেকনাফ ট্রলার মালিক সমিতির কাছে থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ৫ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ১০টি ট্রলারসহ ৬৩ জন জেলে অপহরণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল গত চারদিনেই ৬টি ট্রলার থেকে ৪৪ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে গোষ্ঠীটি। বর্তমানে অন্তত ৫১ জন বাংলাদেশি জেলে তাদের হেফাজতে রয়েছেন, যাদের কোনো খোঁজ মিলছে না।
অন্যদিকে, নাফ নদীর জলসীমায় অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোস্টগার্ডের অভিযানে ১২২ জন জেলে আটক হয়েছেন। এদের মধ্যে ২৯ জন বাংলাদেশি ও বাকিরা রোহিঙ্গা।
বিজিবির তথ্য মতে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত সীমান্ত ও বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্রায় ২৫০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে ১৮৯ জনকে ফেরত আনা সম্ভব হলেও সাম্প্রতিক সময়ে অপহৃত জেলেদের ফেরানো যায়নি।
টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের জেলে ও ট্রলার মালিকরা নাফ নদী ও নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। বিজিবি জানিয়েছে, জেলেদের মুক্তি ও ভবিষ্যতে অপহরণ রোধে আরাকান আর্মির ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।