থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে হঠাৎ মোড় ঘোরানো এক নাটকীয় পরিণতির মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ হারানোর মাত্র দু’দিনের মাথায় সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করলেন পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে ব্যাংককের গভর্নমেন্ট হাউসে নতুন মন্ত্রিসভার ১৪ জন সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করেন।
থাই সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নেশন’ জানিয়েছে, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া পেতংতার্ন স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিটে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান এবং সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসিমুখে শুভেচ্ছা জানান। এর আগে ১ জুলাই, থাই ক্রিমিনাল কোর্ট তার প্রধানমন্ত্রিত্ব সাময়িকভাবে স্থগিত করেছিল।
নতুন মন্ত্রিসভায় পেতংতার্ন ছাড়াও শপথ নেন কৃষি ও সমবায় মন্ত্রী আত্তাকর্ন সিরিলাত্তায়াকর্ন, উপশিক্ষামন্ত্রী তেওয়ান লিপতাপাল্লপ, উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী চাইচানা ডেচডেচো এবং শ্রমমন্ত্রী পংকাবিন জুংরুংরুয়াংকিতসহ আরও অনেকে। শপথগ্রহণের আগে মন্ত্রীরা পরিচয়পত্র ও সরকারি নথির জন্য সাদা ইউনিফর্মে ছবি তোলেন এবং আরটি-পিসিআর টেস্ট করান।
নতুন মন্ত্রিসভা এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিতের অধীনে কাজ করবে। ফুমথাম উইচায়াচাইকে মন্ত্রিসভায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োগের বিষয়েও অবহিত করা হয়।
সরকারের এই রদবদলের পেছনে বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, ভুমজাথাই পার্টির ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়া। এতে সরকার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছে। সেই সঙ্গে বাজেট পাস ও আইন প্রণয়নের কার্যকারিতা নিয়েও দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
এদিকে পেতংতার্নের জনপ্রিয়তা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপের কারণে, যেখানে তিনি কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে সীমান্ত ইস্যু নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এই ঘটনায় তিনি রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েন।
উল্লেখ্য, পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা। একসময় সেনা-সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। আদালত তাকে অভিযোগের জবাব দিতে ১৫ দিনের সময়সীমা দিয়েছে।