Ridge Bangla

ঢাকায় অভিজাত পার্টিতে নতুন আতঙ্ক ‘পার্টি ড্রাগ’

রাজধানী ঢাকার গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরা এলাকাসহ বিভিন্ন নামিদামি রিসোর্ট ও হোটেলে এখন নিয়মিতভাবেই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজন করা হয় ডিজে পার্টির। জন্মদিন উদযাপন, বিয়েসহ নানা ইভেন্টেই দেখা যাচ্ছে ইংরেজি-হিন্দি গানের তালে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরা রাতভর নাচে-গানে মেতে থাকেন।

তবে স্বাভাবিকভাবে এত দীর্ঘসময় উচ্ছ্বাস ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাই দীর্ঘ সময় ধরে উচ্ছ্বাস বজায় রাখতে অনেকেই ব্যবহার করছেন পার্টি ড্রাগ হিসেবে পরিচিত ‘এক্সট্যাসি’ বা এমডিএমএ। এতে উত্তেজক ও চিত্তাকর্ষক প্রভাব তৈরি করে তারা রাতভর উচ্ছ্বাস ধরে রেখে এসব ডিজে পার্টিতে উদযাপন করছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) জানায়, এই কৃত্রিম সাইকোঅ্যাকটিভ ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল একদিকে উত্তেজক, অন্যদিকে ভ্রমসৃজনকারী হিসেবে কাজ করে। দ্রুত সেরোটোনিন, ডোপামিন ও নর-অ্যাড্রেনালিন নিঃসরণ ঘটিয়ে এটি ব্যবহারকারীর মধ্যে অস্থায়ী ইউফোরিয়া, আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক ঘনিষ্ঠতার অনুভূতি তৈরি করে। আলো ও সংগীতকে প্রবলভাবে অনুভব করানোর ফলে পার্টি বা ক্লাব সংস্কৃতিতে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।

ডিএনসি সম্প্রতি ঢাকায় ৩১৭ পিস এক্সট্যাসি জব্দ করেছে। যুক্তরাজ্য থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে আনা চালানটি ছিল বিদেশি ব্র্যান্ডের চকলেটের নিচে লুকানো। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও এক ডিজে। তারা স্বীকার করেছে, উন্নত দেশ থেকে নিয়মিত এ ধরনের ড্রাগ আমদানি করে উচ্চমূল্যে অভিজাত শ্রেণির কাছে সরবরাহ করা হতো। প্রতি পিসের দাম ৭-১০ হাজার টাকা।

কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এলিট শ্রেণির তরুণ-তরুণী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, চিকিৎসক, শিল্পী, মডেলসহ অনেকেই এই ড্রাগ ব্যবহার করছেন। এনক্রিপ্টেড অ্যাপের মাধ্যমে চক্রটি নিজেদের ও গ্রাহকদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতো। তারা মূলত অভিজাত পার্টিতেই এসব মাদক সরবরাহ করতো।

চিকিৎসকরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এমডিএমএ সেবনে হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ বেড়ে যায়। এই সেবনের ফলে ডিহাইড্রেশন, খিঁচুনি, লিভার-কিডনির ক্ষতি ও হঠাৎ মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারে মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক জটিলতা দেখা দেয়।

ডিএনসি জানিয়েছে, চক্রটির সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। তাদেরকেও ধরতে তদন্ত চলমান। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদেরকেও সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ১০

আরো পড়ুন