টেকনাফের সমুদ্রপাড়ে ফের অশান্তির ছায়া নেমেছে। গত ২২ দিনে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের জলসীমা থেকে ১৯টি ট্রলারসহ ৫৬ জন বাংলাদেশি জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, সশস্ত্র আরাকান আর্মি নৌকায় থাকা জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, মুক্তিপণের দাবি করছে, কিন্তু অধিকাংশেরই ফেরার কোনো খবর মেলছে না।
শাহপরীর দ্বীপের এক নারী জানিয়েছেন, তার স্বামী মাছ ধরতে নৌকায় গিয়েছিলেন, কিন্তু আর ফিরে আসেননি। প্রতিদিন সমুদ্রপাড়ে দাঁড়িয়ে তিনি স্বামীর ফিরে আসার আশা করছেন, যা প্রতিনিয়ত ভেঙে যাচ্ছে। নিখোঁজ জেলেদের পরিবারগুলো এখন অন্ধকারের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
জেলে সংগঠনের নেতারা বলেন, সমুদ্রে নামলেই জেলেদের বুকের ভেতর ভয় কাজ করে। ট্রলার মালিক শফিকুল ইসলাম জানান, “জীবন বাজি রেখেই সমুদ্রে যেতে হয়, কারণ পরিবার জীবিকার জন্য নির্ভরশীল।”
সচেতন মহল মনে করছেন, রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের সুযোগ নিয়ে আরাকান আর্মি সীমান্তবর্তী জলসীমা থেকে সহজ টার্গেট হিসেবে বাংলাদেশি জেলেদের ধরে নিচ্ছে। বিজিবি বলছে, তারা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং কূটনৈতিক আলোচনা চলছে।
নিখোঁজ প্রতিটি ট্রলারের সঙ্গে পরিবারের অর্থনৈতিক ক্ষতিও বাড়ছে। স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক করে দিয়েছেন, “আরাকান আর্মির এই বেপরোয়া কার্যক্রম শুধু জেলেদের নয়, পুরো সীমান্তের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।”
সীমান্তবর্তী এই এলাকায় মানুষের চোখের জল এখনও থেমে নেই। এক শিশুর কণ্ঠে উঠে আসে প্রশ্ন, “আমার বাবা কি আবার আসবে?” যা পুরো উপকূলের মানুষের বেদনার প্রতিফলন।