Ridge Bangla

জুলাই আন্দোলনের রক্তাক্ত চোখে আজও ব্যথা

আজ ৯ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস। বিশ্বজুড়ে চক্ষু ও দৃষ্টি সচেতনতা বিষয়ক নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে এ দিবস। বাংলাদেশেও অন্যান্য দেশের মতো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ন্যাশনাল আই কেয়ারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এ দিবস উপলক্ষে চক্ষু সচেতনতা ও বিনামূল্যে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

দেশে আজ নানা আয়োজনে বিশ্ব দৃষ্টি দিবস পালিত হলেও তা যেন স্পর্শ করছে না গত বছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া জুলাই যোদ্ধাদের। চোখের চিকিৎসার জন্য দৌড়াদৌড়ি করা অনেকেই নানা অবহেলা ও হয়রানির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়ে দৃষ্টি হারানো বা দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগতে থাকা মানুষদের নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

জুলাই মাসে রাজধানীর উত্তরায় আজমপুরে আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন মো. ইমরান হোসেন। ১৮ জুলাইয়ের সেই সহিংসতায় তার মুখ, চোখ ও বাঁ-হাতে গুলি লাগে। এরপর থেকে আর পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি তিনি। এক চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, অন্য চোখেও ঝাপসা দেখছেন। বর্তমানে তার বাঁ-হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে, হাতে রয়ে গেছে মেটালিক পিলেট।

ইমরানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও তেমন অগ্রগতি হয়নি। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ঘুরেও কার্যকর চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। গাজীপুরের টঙ্গীর এই তরুণ জানান, তিনি কোনো আর্থিক সহায়তা চান না, শুধু চিকিৎসা চান। সুস্থভাবে একটু বাঁচতে চান।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৮৬৪ জন। তাদের মধ্যে ১১ জন চিরতরে দুই চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন, ৪৯৩ জন হারিয়েছেন এক চোখের দৃষ্টি। এছাড়া অনেকে আংশিক দৃষ্টি ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা জানিয়েছেন, অধিকাংশ রোগীর চোখে মেটালিক পেলেট বা বাস্তব গুলি লেগেছে। তাদের মধ্যে কর্নিয়া ছিদ্র, রেটিনা ক্ষত, চোখ ফেটে যাওয়া এবং রক্তক্ষরণের মতো জটিলতা দেখা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হেলথ কার্ড বিতরণ চলছে। আহতদের তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সরকারি ভাতা প্রদান ও পুনর্বাসনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ৩৩

আরো পড়ুন