Ridge Bangla

জাল সনদসহ বাজে ব্যবহার, নানাবিধ অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি

সাতক্ষীরা সদরের ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুলের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে ধরেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান নিয়মিত অশালীন ভাষায় কথা বলেন, দুর্ব্যবহার করেন এবং অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িত। তারা স্পষ্ট করে জানান, তার উপস্থিতিতে তারা আর ক্লাসে অংশ নেবেন না।

শিক্ষার্থীরাও অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করেন। তারা ঘোষণা দেন, “প্রধান শিক্ষক অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরব না।” এ সময় মানববন্ধনে বিভিন্ন স্লোগানে প্রতিবাদ জানান অংশগ্রহণকারীরা।

খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল দ্রুত বিদ্যালয়ে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার অনুরোধ জানান।

এদিকে অনুসন্ধানে প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুলের নিয়োগ সংক্রান্ত অসঙ্গতি উঠে এসেছে। জানা গেছে, তিনি ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন, অথচ তার শিক্ষা সনদ ইস্যু হয়েছে ১৯ আগস্ট ১৯৯৫—অর্থাৎ সনদ পাওয়ার আগেই চাকরিতে নিয়োগ পান।

তাছাড়া, তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতির সময় যেই বিএড সনদ জমা দেন, সেটিও বিতর্কিত। তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে ডিগ্রি অর্জনের দাবি করেন, অথচ ২০০৮ সালের ১৫ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির স্বীকৃতি বাতিল করে দেয়। তবুও তিনি ২০০৯ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মমিনুর রহমান দাবি করেন, “আমি কঠোর শৃঙ্খলার পক্ষে, তাই অনেকেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।” অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ঘুষ দিতে হয়েছে, তাই তহবিল ব্যবহার করেছি।”

তবে জাল সনদ ব্যবহারের অভিযোগ তিনি সরাসরি অস্বীকার করেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল জানান, “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলোর তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ফিরে আসার অনুরোধ করছি।”

আরো পড়ুন