মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “জলমহালের প্রকৃত অধিকার মৎস্যজীবীদের—এটা আর কারো হতে পারে না।” তিনি বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবীরা যেখানে আছেন, সেখানেই তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার (৬ জুলাই) সিরাজগঞ্জের নিমগাছি এলাকায় সমাজভিত্তিক মৎস্যসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, “যথাযথভাবে পুকুর খনন করে তাতে মাছের পোনা ছাড়া হলে শুধুমাত্র নিজের চাহিদা নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকাতেও মাছ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।” তিনি এই প্রকল্পকে দীর্ঘমেয়াদি রূপ দিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, “প্রকল্প থাকুক বা না থাকুক, মৎস্যজীবীরাই জলমহালের প্রকৃত মানুষ। তাই জলমহালের প্রথম ও প্রধান অধিকার তাদেরই হওয়া উচিত।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, “প্রকল্পের বাস্তবায়ন সফল হলে ভবিষ্যতে এর সম্প্রসারণ সম্ভব হবে।” তিনি জানান, সুফলভোগীরা মাছ চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে উঠছেন এবং উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছেন।
তিনি আরও বলেন, “মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে সবার আরও আন্তরিকতা ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহীনূর রহমান, সুফলভোগীদের প্রতিনিধি মো. বাকি বিল্লাহ ও মায়া রানী, এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিশেষ সেলের কেন্দ্রীয় সদস্য হুযাইফা সম্রাট রাব্বি। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক শহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. হেমায়েত হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া, রায়গঞ্জ ইউএনও মো. হুমায়ুন কবির, রায়গঞ্জ থানার ওসি মো. হারুন অর রশিদসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানের আগে ফরিদা আখতার নিমগাছি এলাকায় জয়সাগর দীঘিতে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন এবং প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হ্যাচারি পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিভাগের পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার চারটি উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। এতে প্রায় ৭৭৯টি পুকুরে ১০,৫০০ জন সুফলভোগী যুক্ত আছেন। এর ফলে একদিকে মাছের উৎপাদন বাড়ছে, অন্যদিকে সুফলভোগীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।