Ridge Bangla

চাষ হচ্ছে ‌নিষিদ্ধ ‘পিরানহা’, ‘রূপচাঁদা’ বলে দেদারসে বিক্রি বাজারে

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিষিদ্ধ মাছ ‘পিরানহা’ এখনও চাষ হচ্ছে এবং বাজারে ‘রূপচাঁদা’ বা অন্যান্য ভুয়া নামে বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই মাছ দেখতে অনেকটা রূপচাঁদার মতো হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা বিভ্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত তা কিনে নিচ্ছেন।

ঢাকার কারওয়ান বাজারে এক ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে মাছ কিনে প্রতারণার শিকার হন আব্দুল মজিদ মিয়া। বাসায় গিয়ে মাছ কাটার সময় মুখে বড় দাঁত দেখে তিনি বুঝতে পারেন, এটি আদৌ রূপচাঁদা নয়। একই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে ভাটারার আফসানা বেগমেরও।

মূলত এই মাছের প্রকৃত নাম ‘রেড বেলিড পাকু’, যা দেখতে অনেকটা রূপচাঁদার মতো এবং বিক্রেতারা কখনো ‘পাকা পিরানহা’, কখনো ‘সুন্দরী মাছ’ বা ‘লাল চান্দা’ নামে বিক্রি করছেন। যদিও বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালেই পিরানহা মাছের আমদানি, চাষ ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।

গোপন সূত্রে জানা গেছে, খুলনা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, গাইবান্ধা, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় এখনও সীমিত আকারে এ মাছ চাষ করা হচ্ছে। বাজারে এক কেজি মাছ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মাছ পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দ্রুত বংশবিস্তার করে এটি স্থানীয় প্রজাতির মাছের খাদ্যগ্রহণে বাধা দেয় এবং জলজ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। একে ‘জলজ আগ্রাসী প্রজাতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তারা।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) পিরানহা নিষিদ্ধের আগে এর উপর কিছু গবেষণা করলেও রেড বেলিড পাকু নিয়ে আলাদা গবেষণা হয়নি। তবে পিরানহা ও পাকুর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে: পিরানহা হয় ছোট, দাঁত তীক্ষ্ণ ও ত্রিকোণ; পাকু হয় বড় আকারের, দাঁত চ্যাপ্টা এবং প্রধানত উদ্ভিদভোজী।

‘পেটস অন মম’ ওয়েবসাইট অনুসারে, পাকু একা চলাফেরা করে, কিন্তু পিরানহা দলবদ্ধভাবে থাকে এবং আক্রমণ করে। পোনারাও দলবদ্ধভাবে চলে, যা পাকুর মধ্যে দেখা যায় না।

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের প্রতারণা ও নিষিদ্ধ মাছ বিক্রি ঠেকাতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও কঠোর নজরদারি ছাড়া এই সমস্যা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়।

আরো পড়ুন