গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা অনুমোদনের পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। তবে এই সমালোচনা ও নিষেধাজ্ঞার হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সরকার।
শনিবার (৯ আগস্ট) ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, যেসব দেশ নিন্দা করেছে বা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে, তারা ইসরায়েলের সংকল্পকে দুর্বল করতে পারবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমাদের শত্রুরা আমাদের শক্তিশালী হিসেবেই পাবে, যা তাদের জন্য কঠিন আঘাত হবে।”
গাজায় যুদ্ধ সম্প্রসারণের এই সিদ্ধান্তের পর জাতিসংঘ, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং কানাডাসহ বহু দেশ নিন্দা জানায়। জার্মানি ইতোমধ্যে ইসরায়েলে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি বন্ধ করেছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার অনুমোদিত পরিকল্পনায় পাঁচটি মূল নীতি রয়েছে—হামাসকে নিরস্ত্র করা, সব জিম্মিকে মুক্ত করা, গাজা উপত্যকার সামরিকীকরণ, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয় এমন একটি বিকল্প বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গাজা শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া ও প্রায় দশ লক্ষ বাসিন্দাকে দক্ষিণে সরিয়ে দেওয়া হবে। মধ্য গাজার শরণার্থী শিবির ও সম্ভাব্য জিম্মি আটক স্থাপনাগুলোর নিয়ন্ত্রণও নেবে ইসরায়েলি বাহিনী। কয়েক সপ্তাহ পর মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্বিতীয় দফায় আক্রমণের পরিকল্পনাও রয়েছে। হামাস এই পরিকল্পনাকে “নতুন যুদ্ধাপরাধ” আখ্যা দিয়ে এর জন্য ইসরায়েলকে চরম মূল্য দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এই পরিকল্পনা গাজার বিপর্যয়কর পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটাবে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক সতর্ক করে বলেছেন, এতে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি, হত্যা, অসহনীয় দুর্ভোগ, অর্থহীন ধ্বংস ও নৃশংস অপরাধের ঝুঁকি বাড়বে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী অন্তত ৬১,১৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।