অস্ত্রের মুখে খাগড়াছড়ি থেকে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীসহ মোট ছয়জনের এখনও কোনো খোঁজ মেলেনি। অপহরণের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তাদের উদ্ধার না হওয়ায় পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
১৬ এপ্রিল, বুধবার সকালে বিজু উৎসব শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য কুকিছড়া থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে খাগড়াছড়ি সদরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গিরিফুল এলাকায় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের অপহরণ করে। অটোরিকশার চালকসহ মোট ছয়জন অপহরণের শিকার হন।
অপহৃতদের মধ্যে রয়েছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের রিশন চাকমা এবং শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। তারা সবাই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অটোরিকশা চালকের পরিচয় এখনো নিশ্চিত নয়।
অপহরণের শিকার দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “আমার মেয়ে দিব্যি চাকমা বিজুতে অংশ নিতে খাগড়াছড়ি গিয়েছিল। ফেরার পথে অপহরণ করা হয়েছে। প্লিজ, কেউ যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না করে। দোষ করলে শাস্তি দিন, কিন্তু সন্তান হারানোর কষ্ট সহ্য করা অসম্ভব। আমি হাতজোড় করে বলছি, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিন।”
এ ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)-সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) দায়ী করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি-বিরোধী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-কে। তবে ইউপিডিএফ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অপহৃতদের উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকেও এক বিবৃতিতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।