Ridge Bangla

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেহাল দশা, এ যেন জনদুর্ভোগে পরিণত হওয়া এক “মরণফাঁদ”

খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগপথ। মাত্র পাঁচ বছর আগে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে সেটি ভয়াবহ নাজুক অবস্থায় পড়ে “মরণফাঁদে” পরিণত হয়েছে। বিরামহীন জনদুর্ভোগে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ডুমুরিয়ার ঝিলেরডাঙ্গা এলাকায় গত সোমবার সকালে পিকআপ ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার ঘটনাটি নতুন করে আলোচনায় এনেছে এ সড়ককে। এর আগে গত এক বছরে এই মহাসড়কে অন্তত ৫৬টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩ জন, আহতের সংখ্যা শতাধিক। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন।

উল্লেখ্য, এই সড়কের ব্যবহারিক গুরুত্ব অনেক। প্রতিদিন ভোমরা স্থলবন্দর, বেনাপোল ও যশোরের শিল্পাঞ্চল থেকে ভারী ট্রাকসহ বিভিন্ন যান এই রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু নির্মাণের পাঁচ বছরের মধ্যেই জিরোপয়েন্ট থেকে কৈয়া পর্যন্ত অংশ চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। কোথাও বিটুমিন উঠে গেছে, কোথাও ঢেউয়ের মতো হয়ে গেছে রাস্তা, আবার কোথাও দেবে গেছে। অস্থায়ীভাবে ইটের সলিং দেওয়া হলেও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

খুলনা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কয়েকশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক এত দ্রুত অচল হয়ে পড়া দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রমাণ। তার দাবি, দ্রুত সংস্কার না হলে এই মহাসড়ক দিনে দিনে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানিমুল হক বলেন, “সড়ক নির্মাণের পর ভারী যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে, বিশেষ করে ভোমরা বন্দরের পাথরবাহী ট্রাকের কারণে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, একটি সড়ক শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়—এটি মানুষের জীবন ও নিরাপত্তার সঙ্গেও যুক্ত। তাই টেকসই নির্মাণ, স্বচ্ছতা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়া এ ধরনের জনপরিসেবামূলক অবকাঠামো মানুষের জন্য ভয়াবহ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এখন প্রয়োজন জরুরি সংস্কার ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে: ১০

আরো পড়ুন