কেনিয়ায় প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন চার শতাধিক মানুষ। রাজধানী নাইরোবিসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে “রুটো পদত্যাগ করো” স্লোগানে বিক্ষোভে অংশ নেয়। ২০২৪ সালের প্রাণঘাতী বিক্ষোভের এক বছর পূর্তিতে এই আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
বিক্ষোভের দিন সরকার টেলিভিশন ও রেডিওতে সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করলেও নাইরোবি হাইকোর্ট সেই আদেশ বাতিল করে দেয়। একই সময় প্রেসিডেন্ট রুটো উপকূলীয় কাউন্টি কিলিফির এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বলেন, “বিক্ষোভ যেন দেশের শান্তি নষ্ট না করে। আমাদের আর কোনো দেশ নেই পালিয়ে যাওয়ার জন্য।” তখন তার সরকারি বাসভবন স্টেট হাউসের দিকে বিক্ষোভকারীদের মিছিল এগিয়ে চলছিল।
স্টেট হাউস ও সংসদ ভবনের চারপাশে পুলিশ কাঁটাতার ও ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখে। সরকার হতাহতের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা জানায়নি। তবে কেনিয়া মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, ল’ সোসাইটি অব কেনিয়া এবং পুলিশ সংস্কার সংস্থা জানায়, অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন এবং ৮৩ জন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, যাদের মধ্যে আটজন গুলিবিদ্ধ। আহতদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি কেনিয়া জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ১৬ জন পর্যন্ত হতে পারে।
এক বিক্ষোভকারী আমিনা মুডে বিবিসিকে বলেন, “আমি আমার সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য রাস্তায় নেমেছি। শিক্ষা ব্যবস্থা এবং দেশের অবস্থা আমাদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। এখনই সময় আমাদের কথা শোনানোর।”
নাইরোবির রাস্তায় পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাসে আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, জনবহুল এলাকা ফাঁকা হয়ে পড়ে। সংসদ ভবনের সামনে নিহতদের স্মরণে ফুল ও পোস্টার রেখে শ্রদ্ধা জানান অনেকেই। এক তরুণী কান্নায় ভেঙে পড়ে বিবিসিকে বলেন, “গত বছর যারা মারা গেছেন, আজ আমরা তাদের জন্যও লড়ছি।”