Ridge Bangla

কম্বোডিয়ার বিএম-২১ রকেট হামলায় থাইল্যান্ডে নিহত ১৫ জন

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে দ্বিতীয় দিনের মতো সংঘাত চলমান রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে গত এক দশকের মধ্যে এটি সবচেয়ে তীব্র সংঘর্ষ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ জুলাই) ভোর থেকে উভয় পক্ষ ভারী কামান ও রকেট ছুড়েছে বলে জানিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ। থাইল্যান্ডের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উবন রাতচাথানি ও সুরিন প্রদেশে কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী রাশিয়ার তৈরি বিএম-২১ রকেট সিস্টেমসহ ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছে। দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি অনুযায়ী উপযুক্ত পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষে থাইল্যান্ডের অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৪ জনই বেসামরিক নাগরিক। আহত হয়েছেন আরও ৪৬ জন, এর মধ্যে ১৫ জন সেনা সদস্য।

অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার হতাহত বা সরিয়ে নেওয়া নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে ওদার মিনচেই প্রদেশের প্রশাসনিক মুখপাত্র মেথ মিয়াস ফিয়াকডি জানান, সেখানে এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবারকে।

গতকাল থাইল্যান্ড বিরল পদক্ষেপ হিসেবে ছয়টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখে, এর মধ্যে একটি থেকে কম্বোডিয়ার একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। কম্বোডিয়া একে ‘বেপরোয়া ও নির্মম সামরিক আগ্রাসন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও মালয়েশিয়া শান্তিপূর্ণ সংলাপের প্রস্তাব দিলেও থাইল্যান্ড তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ নিয়ে বৈঠকে বসেছে এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

সীমান্ত নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিরোধ শত বছরের পুরোনো। ১৯০৭ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক সরকার দুই দেশের মধ্যে একটি সীমানা নির্ধারণ করে দেয়, যা নিয়ে আপত্তি ছিল থাইল্যান্ডের। ২০০৮ সালে ১১ শতকের একটি মন্দির ঘিরে সংঘর্ষ চরমে ওঠে। তখন থেকেই সীমান্ত এলাকায় সময় সময় রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটেছে।

নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয় গত মে মাসে এক কম্বোডীয় সেনা নিহতের ঘটনায়। এরপর দুই দেশই সীমান্তে সেনা বাড়াতে থাকে। এর মধ্যে সম্প্রতি স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক থাই সেনা আহত হন। সেই ঘটনার পর থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেয় এবং কম্বোডিয়াও ব্যাংকক থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে।

আরো পড়ুন