আজ (৫ আগস্ট) পালিত হচ্ছে ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’। ২০২৪ সালের এই দিনে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশত্যাগে বাধ্য হন। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পালাবদল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। পরবর্তীকালে দিনটি ‘৩৬ জুলাই’ নামেও পরিচিতি পায়।
দিবসটি স্মরণে রাজধানীসহ সারা দেশে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। আজ সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং জাতীয়ভাবে দিবসটি উদ্যাপন করা হচ্ছে। সকাল ৯টায় দেশের ৬৪ জেলার জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পাশাপাশি, দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দিনব্যাপী ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা’র আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চ, সাউন্ড ও লাইটিংসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের এলাকায়।
দিনের মূল আকর্ষণ হিসেবে বিকেল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় থাকবে বিশেষ ড্রোন শো এবং রাত ৮টায় পরিবেশিত হবে জনপ্রিয় ব্যান্ডদলের সঙ্গীতানুষ্ঠান।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, “জুলাই আমাদের দেখিয়েছে একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। শহীদদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে, তা কোনো মূল্যে নষ্ট করা যাবে না। পতিত স্বৈরাচারী ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত; তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে ২০২৪ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। ঐতিহাসিক এই অর্জনের বর্ষপূর্তিতে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।”
এছাড়া বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন দিবসটি ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।