Ridge Bangla

এক মাস না পেরোতেই ফিরে আসছে সেই অবৈধ ইটভাটা

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বামনসর্দার গ্রামে ভেঙে ফেলা বিতর্কিত এমএসবি ইটভাটা আবারও নির্মিত হতে চলেছে। দেড় মাস আগে এই ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ৪১ একর ধানক্ষেত পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যৌথ অভিযানে গত ১৯ মে ভাটাটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

তবে এক মাস না পেরোতেই সেই স্থানে আবারও ক্লিঙ-ওয়াল ও চিমনি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন যেন তাদের ফসল পুনরায় ক্ষতির মুখে না পড়ে।

জানা গেছে, ‘মেসার্স শিল্পী এন্টারপ্রাইজ’-এর মালিকানাধীন এমএসবি ইটভাটাটি দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০২১ সালের ৩০ জুন ছিল সর্বশেষ অনুমোদনের মেয়াদ, যা শেষ হওয়ার পর একটি রিটের মাধ্যমে কার্যক্রম চালু রাখে মালিকপক্ষ। চলতি বছরের বোরো মৌসুমে এই ইটভাটার ধোঁয়ায় অন্তত ৭৮ জন কৃষকের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে, মালিকপক্ষ প্রভাব খাটিয়ে অনেক কৃষককে কম টাকায় ক্ষতিপূরণ নিতে বাধ্য করে।

ইটভাটা ভেঙে ফেলার পর প্রশাসনের আশ্বাসে কৃষকদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু পুনর্নির্মাণকাজ শুরুর খবরে সেই স্বস্তি এখন উদ্বেগে রূপ নিয়েছে।

ভাটার ম্যানেজার মোনা চন্দ্র বর্মন বলেন, “আমি কিছু জানি না, মালিকই সব জানেন।” মালিক মমিনুল ইসলামকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনেই তিনি কল কেটে দেন।

এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, “পুনর্নির্মাণের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। অনুমতি ছাড়া কেউ নির্মাণ করলে আবারও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রংপুর বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক নুর আলম বলেন, “ইটভাটা ভেঙে দেওয়ার পরও নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে কীভাবে, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের মতে, বারবার প্রশাসনের অভিযান সত্ত্বেও অবৈধভাবে ইটভাটা গড়ে উঠছে, যা প্রভাবশালী মহলের পৃষ্ঠপোষকতার ইঙ্গিত দেয়। এখন দেখার বিষয়—প্রশাসন কতটা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নিতে পারে।

এই পোস্টটি পাঠ হয়েছে:

আরো পড়ুন