আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে, ঠিক তখনই শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত কেবল তেহরানেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন, আহত হয়েছেন ৩০০ জনের বেশি। বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে তেহরানসহ কয়েকটি বড় শহরের আবাসিক এলাকা।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা শুধুমাত্র সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তবে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ছবি, শিশু ও নারীর মরদেহ, এবং আহত সাধারণ মানুষের দৃশ্য দেশজুড়ে গভীর ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ইরানি সরকার অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ দমনে যতটা সক্রিয়, দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় ততটাই অকার্যকর।
সরকারবিরোধী অবস্থান থাকা সত্ত্বেও ইরানিরা জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। বিবিসিকে এক তেহরানবাসী বলেন, “আমি ইসলামিক রিপাবলিকের সমর্থক না, কিন্তু এটা আমার দেশ, আমার ঘর।” আরেকজন বলেন, “আমরা নিজেদের প্রযুক্তি অর্জন করেছি। কেউ যদি সেটাকে ধ্বংস করে, তাহলে এটা আমাদের জাতিসত্তার ওপর হামলা।”
প্রতিশোধের দাবিও উঠেছে। অবসরপ্রাপ্ত এক নাগরিক বলেন, “আর কত চুপ থাকব? আমাদের দেশ, আমাদের বিজ্ঞানী—সবকিছু নষ্ট করে দিচ্ছে। এবার পাল্টা কিছু করতেই হবে।”
এই হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানি সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও বেসামরিক নাগরিক। নিহতদের মধ্যে ইরানের জাতীয় প্যাডেল খেলোয়াড় পারসা মনসুরও রয়েছেন, যিনি প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে প্রাণ হারান। দেশজুড়ে আজ চলছে রাষ্ট্রীয় শোক ও প্রতিবাদ।