গত ১৭ মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় চলছে ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৩৩৮ জন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রায় ৬৯ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এই আগ্রাসনের মাত্রা আরও বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, আকাশে খরকুটোর মতো উড়ছে মানুষের দেহ। এই নির্মমতার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় বইছে, যার অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সমাবেশ।

গতকালের ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার (৭ এপ্রিল) সারাদেশে পালিত হচ্ছে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও পতাকা শোভা পাচ্ছে। দলে দলে মানুষ মিছিল করে ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানাচ্ছেন।
আজকের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে ধর্মঘট এবং শহরজুড়ে বিক্ষোভ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস বন্ধ রেখেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছেন।

ঢাবি ও বুয়েটের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ব্র্যাক, নর্থসাউথ, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিজ নিজ ক্যাম্পাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।
রাজধানীর বসিলা, মোহাম্মদপুর, পল্টন, বিজয়নগর ও বাইতুল মোকাররমসহ বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষকে বিক্ষোভ ও সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলসমূহ ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে তাদের প্রতিবাদ জানায়।
নারী ও শিশুরাও পিছিয়ে নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সমাজসচেতন নারী-শিশুরাও রাস্তায় নেমে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তাদের দাবি একটাই—এই নির্মম গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এ সময় ইসরায়েলি পণ্য বয়কটসহ নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচিও পালিত হয়।