ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির লক্ষ্যে কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে—এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। তাঁর মতে, ইরান এখনও প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সক্ষমতা ধরে রেখেছে, যদিও সাম্প্রতিক হামলায় তাদের স্থাপনাগুলো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল যৌথভাবে ইরানের ফরদো, নাটাঞ্জ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই হামলাকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসাত্মক’ বলে দাবি করলেও গ্রোসি জানান, স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি এবং ইরান এখনো উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী, ইরানকে ইউরেনিয়াম সর্বোচ্চ ৩.৬৭% মাত্রায় সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যা কেবল বেসামরিক কাজে ব্যবহারের উপযোগী। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলে ইরানও চুক্তি লঙ্ঘন করতে শুরু করে। ২০২১ সাল থেকে দেশটি ৬০% মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হয়।
ইরানে সাম্প্রতিক হামলায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি এ হামলাকে গুরুত্বহীন দাবি করলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্বীকার করেছেন যে এতে ইরান বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
রাফায়েল গ্রোসি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই উত্তেজনা প্রশমিত করা সম্ভব। তবে তাঁর মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে বৈশ্বিক উদ্বেগ আরও বাড়ছে।